হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন. আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। আমার মনে আছে আমি যখন প্রথম এসইও -র নাম শুনি তখন ভয় পেয়ে গেছিলাম যে এটি কিভাবে কাজ করে এবং ওয়েব সাইটে কিভাবে এটাকে ইমপ্লিমেন্ট করতে হয়।
পরবর্তিতে আমি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেঁটে ঘেঁটে দেখেছি যে এসইও কিভাবে কাজ করে, কিভাবে এটাকে কাজ করাতে হয় এবং এই ধরনের অনেক তথ্যবহুল ইনফর্মেশন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমি যখন লিখতে বসলাম তখন বুঝতে পারছিলাম না আমি কিভাবে শুরু করব এবং কিভাবে নতুনদের জন্য এটিকে সহজ করে লিখব। তারপর আর কিছু না ভেবে আমি লেখা শুরু করে দিলাম একটা কম্প্যাক্ট(Compact) এসইও গাইড নিয়ে যাতে নতুনরা উপকার পায়।
আপনি যদি নতুন হন এসইও তে এবং আপনার অনেক কনফিউশন/প্রশ্ন থাকে তাহলে আশা করি আমার এই এসইও নিবন্ধটি আপনার কিছুটা হলেও উপকার করবে। তাই শক্তপোক্ত হয়ে বসে পড়ুন চেয়ারে অথবা শুয়ে পড়ুন মোবাইল নিয়ে আমার এই নিবন্ধটি পড়ার জন্য।😆😆😆 আশা করি অনেক তথ্যবহুল তথ্য আপনাদেরকে দিতে পারব। চলুন তাহলে…
এসইও(SEO) গাইড দিয়ে শুরু করি
যেহেতু পূর্বেই আমি বলেছি যে এসইও(সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) গাইডটি নতুনদের জন্য তৈরি করেছি সুন্দর ভাবে বোঝানোর জন্য। তাই আমি প্রথমেই শুরু করবো কিছু সমালোচনামূলক প্রশ্ন দিয়ে যেগুলো অবশ্যই অবশ্যই আমাদের জানা দরকার। তো চলুন দেখা যাক…
এসইও কি এবং কিভাবে কাজ করে?
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হচ্ছে কিছু কৌশল এর সমন্বয় যাতে করে ওয়েবসাইটের দৃশ্যমান বৃদ্ধি(Visibility) পায় এবং সার্চ ইঞ্জিনে এর র্যাঙ্ক(Rank) বৃদ্ধি পায়। এটাকে অন্যভাবেও সংজ্ঞায়িত করা যায় যে, এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজ(Search Engine Result Pages/SERPs) এর দ্বারা ওয়েবমাস্টার টুলসকে ওয়েবসাইটের কোয়ালিটি সম্বন্ধে জানাবে যাতে করে আপনার ওয়েবসাইটের র্যাঙ্ক বৃদ্ধি পায় এবং অর্গানিক ট্রাফিক(Organic Traffic) বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে।
এসইও প্রধানত নির্ভর করে……
⇒ওয়েবসাইটের কনটেন্ট এর উপর
⇨ওয়েবসাইটের স্ট্রাকচার এবং
⇨ওয়েবসাইটের লিঙ্ক এর উপর
একটা ওয়েবসাইট তৈরীর সময় উপরের বিষয়গুলো এমনভাবে ওয়েবসাইটে সাজাতে হবে যাতে সার্চ ইঞ্জিন খুব সহজেই এগুলো বুঝতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করতে হলে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, আপনার সাইটে ভিউয়ার(Viewer) আসতে হবে। যদি ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ভালো না হয় তাহলে সাইটকে র্যাঙ্ক করাতে অনেক সমস্যা সম্মুখীন করতে হবে। আশাকরি আমার এইটুকু ব্যাখ্যাতে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে এসইও টা কি এবং কিভাবে কাজ করে।
একটি ওয়েবসাইট এর জন্য কেন এসইও দরকার?
আমার পূর্বের এসইওর আলোচনাতে আশা করি আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন যে, একটা সাইটের জন্য এসইও কেন দরকার। সাইটকে র্যাঙ্ক করাতে গেলে অথবা সাইটের দৃশ্যমান আরো বাড়াতে হলে অবশ্যই আপনার সাইটকে এসইও করতে হবে। ওয়েব ট্রাফিকের সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন। আপনি নিচের সার্চইঞ্জিন গুলোর নাম অবশ্যই শুনেছেন
⧫গুগোল(Google)
⧫বিং(Bing)
⧫ইয়াহু(Yahoo)।
ও হ্যাঁ, সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক(Facebook), টুইটার(Twitter), গুগল প্লাস(GooglePlus) এগুলো ওয়েব সাইটে ভিজিটর আনার অন্যতম একটি মাধ্যম। কিন্তু যদি আমি প্রাথমিক উৎসের কথা বলি তাহলে সার্চ ইঞ্জিন অবশ্যই প্রথমে আসবে। শুধু নতুনরা নয়, আমরাও যে কোন কিছু অনুসন্ধান করতে গেলে গুগলের মাধ্যমে কিন্তু সার্চ করি। অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন গুলোর মধ্যে গুগল সবচেয়ে রিচ যার মাধ্যমে আমরা কোন তথ্য খুব সহজেই বের করে ফেলতে পারি। যেই বিষয়টি সার্চ ইঞ্জিনকে সবচেয়ে বেশি ইউনিক(অনন্য) করেছে সেটা হচ্ছে, সার্চ ইঞ্জিন আমাদের হাইলি টার্গেটেড ট্রাফিক(Highly Targeted traffic) প্রদান করে।
আমরা একজন ইউজারকে যা দিতে চাই সার্চ ইঞ্জিন ঠিক সেই জিনিসটি তার কাছে সয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছে দেয়। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যেই ভিজিটর গুলো আসে সেগুলো কিন্তু টার্গেটেড ট্রাফিক নয়। আপনাদের অনেকেরই মনে হতে পারে আমি টার্গেটের ট্রাফিক বলতে আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছি। টার্গেটেড ট্রাফিক মানে হচ্ছে আপনার সাইটের দৃশ্যমান(Visibility) অন্যদের কাছে বাড়াবে এবং আপনার ইনকাম বৃদ্ধি পাবে। আপনি যদি আপনার সাইট তৈরীর ক্ষেত্রে এসইও -র জন্য টাকা-পয়সা খরচ করেন এবং এর মাধ্যমে ভালো একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাহলে এটা আপনার ভুল হবে না। কারণ সুন্দরভাবে এসইও করার মাধ্যমে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
যদি আমরা আমাদের সাইটের সঠিকভাবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও না করি তাহলে কি হবে?
সংক্ষেপে যদি বলি তাহলে আপনি ভালো মানের ট্রাফিক পাবেন না। যার ফলে আপনার ইনকামও কম হবে। যখন আমরা আমাদের সাইটের এসইও করব তখন ইউজাররা সার্চ ইঞ্জিনে কিভাবে লিখে সার্চ করে সে জিনিসটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ এই বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করেই আমাদেরকে এসইও করতে হবে। যদি আমরা এই বিষয়গুলো মাথায় না রেখে এসইও করি তাহলে অবশ্যই অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিন আমাদের সাইটিকে অবজ্ঞা করবে এবং সার্চ রেজাল্টে প্রথম দিকে দেখাবে না।
কি হবে যদি আমি আমার সাইটের এসইও না করি???
হাহাহাহা…… আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন যে আমি একই কথা বারবার বলে যাচ্ছি। কিন্তু কিছু ইন্টারেস্টিং জিনিসের জন্য আমি এই কথাটির পুনরাবৃত্তি করলাম যাতে আপনারা মজা পান। আমি একই কথা আবার বললাম এই কারণে যে আমি আপনাদের আরও কিছু ইন্টারেস্টিং জিনিস জানাবো। যখনই আমাদের ওয়েবসাইট লাইভে যাবে তখন সার্চ ইঞ্জিন এটাকে ক্রল(Crawl) করবে এবং দেখবে সাইটটি কিসের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এখন কোন ইউজার যদি এমন কোন টপিক সার্চ করে যেটা আপনার কোন একটা টপিকস এর সাথে মিলে যায় তখন সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইটটিকে সার্চ রেজাল্টে প্রদর্শন করবে। সার্চ ইঞ্জিন প্রচন্ড বুদ্ধিমান এবং প্রতিনিয়ত তারা তাদের টেকনোলজি উন্নত করে যাচ্ছে যাতে একটা ওয়েবসাইটকে ভালোভাবে ক্রল(Crawl) করতে পারে। কিন্তু ক্রলেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে আর এখানেই এসইও প্রধানত কাজে আসে। এসইও, সার্চ ইঞ্জিন কে ভালোভাবে বোঝায় যে তার ওয়েবসাইটটি কি সম্বন্ধে যাতে করে সার্চ ইঞ্জিন সাইট সম্বন্ধে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারে। ভালোভাবে এসইও করলে আপনি অনেক ভিউয়ার পেতে পারেন কিন্তু যদি ভুল ভাবে আপনি এসইও করেন তাহলে আপনার সাইটের ভিজিটর অনেক কমে যাবে এবং ট্রাফিক একেবারে শূন্যের কাছে চলে আসতে পারে। এসইও যে শুধু আপনার ওয়েবসাইটটিকে দৃশ্যমান করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন তা নয়। এটি সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে নিয়ে আসতেও মুখ্য ভূমিকা পালন করে। যেহেতু এখনকার সময়ে কোটি কোটি ওয়েবসাইট আছে সেহেতু সবাই চায় তাদের সাইটটিকে সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজে নিয়ে আসার জন্য। আর আমরা প্রধানত প্রথম দুই তিনটে পেজ ছাড়া আর পরের সার্চ রেজাল্টে কি আছে সেগুলো খেয়াল করিনা। এই জন্য সুন্দরভাবে এসইও করার কোন বিকল্প নেই। আশাকরি এসইও সম্বন্ধে আপনাদের কনসেপ্ট আরো একটু ক্লিয়ার হল। তো চলুন আমরা পরের ধাপে যাই।
আমি কি এসইও করতে পারব?
এটা সত্য যে এসইও একটু জটিল কিন্তু এতটা জটিল নয় যে আপনি করতে পারবেন না। যদি আপনি বেসিক ধারনাগুলো ভালো ভাবে নিতে পারেন তাহলে আপনি অনেক বড় কিছু করে ফেলতে পারবেন। ইন্টারনেটে এসইও রিলেটেড অনেক টপিকস আছে, অনেক রিসোর্স আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি প্রতিনিয়ত সাহায্য পাবেন। যদি আপনি ভালো ভাবে শেখেন এবং অনুশীলন করেন তাহলে আপনি একজন এসইও বিশেষজ্ঞ হয়ে যাবেন। কিন্তু অবশ্যই মনে রাখবেন এসইওর মুল ধারণা সম্বন্ধে একটি ভালো জ্ঞান রাখা আবশ্যক।
ব্ল্যাক হ্যাট(Black Hat SEO) vs হোয়াইট হ্যাট(White Hat SEO)
এসইও তে প্রবেশ করার আগে আপনাদের ব্ল্যাক হ্যাট এবং হোয়াইট হ্যাট এসইও সম্বন্ধে হালকা ধারণা দিব যেটা জানা আবশ্যক।
ব্ল্যাক হ্যাট এসইও র কৌশল
→ডুপ্লিকেট কনটেন্ট
→অদৃশ্যমান টেক্সট এবং জগাখিচুড়ী পূর্ণ কিওয়ার্ড
→ইউজারকে অন্য সাইট অথবা অন্য পেজে রিডিরেক্ট করা
→এমন কোন সাইটকে লিঙ্ক করা যেটার ওই পোস্টের সাথে কোন সম্পর্ক নেই
হোয়াইট হ্যাট এসইওর কৌশলসমূহ
→সামঞ্জস্য কনটেন্ট
→ইমেজকে ভালোভাবে লেবেলিং করা
→সামঞ্জস্য লিংক এবং রেফারেন্স
→শুদ্ধ বানান এবং গ্রামার অনুসরণ করে বাক্য তৈরি করা
→স্ট্যান্ডার্ড এইচটিএমএল ব্যাবহার একটি অনন্য পেজ টাইটেল তৈরি করা
অবশ্যই মনে রাখবেন আমরা আমাদের এই পোস্টে শুধুমাত্র হোয়াইট হ্যাট এসইও কে অনুসরণ করব। উপরের আলোচনায় আমি যে বেসিক বিষয়গুলো দেখিয়েছি তার মাধ্যমে আপনারা হোয়াইট হ্যাট এবং ব্ল্যাক হ্যাট এসইও র মধ্যে পার্থক্য করতে পারবেন এবং কোনটা ভালো হবে সেটাও নির্ধারণ করতে পারবেন। আরো জানতে চাইলে এখানে ঘুরে আসুন…
এখন আমরা এসইও র তিনটি প্রধান অংশ নিয়ে আলোচনা করবো
→কিওয়ার্ড রিসার্চ(Keyword Research)
→অন পেজ এসইও(On Page SEO)
→অফ পেজ এসইও(Off Page SEO)
পরের পর্বে আরো বিস্তারিত নিয়ে হাজির হব ইনশাল্লাহ।