নতুন/মার্কেটপ্লেস বর্হিরভূত (মার্কেটপ্লেসে হাজারো চেস্টা করে এখনো তেমন কিছু করতে পারেন না) ফ্রিলান্সার? উত্তর যদি হ্যা হয়,তাহলে আর্টিকেলটি বিশেষভাবে আপনার জন্যই।বেশী ভূমিকা না করে সরাসরি কাজের কথায় চলে যাই। তবে হ্যা;সবটুকু আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে না পড়লেও মাঝখানে যে হিসাবটি বুঝানো হয়েছে সেটি মনোযোগ সহকারে বুঝার চেস্টা করেন।
ইতিমধ্যে সবাই নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে,আমাদের দেশে ফ্রিলান্সার এত বেশী হয়ে গেছে যে এর চাপ সামলাতে না পেরে আপওয়ার্ক বাংলাদেশ থেকে ফ্রিলান্সার প্রায় নেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যন্যা মার্কেটপ্লেসেও নবাগতদের প্রায় একই অবস্থা।কিন্তু যে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে এই ফ্রিলান্সিং সেক্টরে এসেছিলাম তা কি এতসহজেই শেষ হয়ে যাবে?
আমার এই কাজের দক্ষতাকে কি আমি কোন কাজেই লাগাতে পারব না? আমার এতদিন কস্ট করে শেখা জিনিসটা দ্বারা কি আমি কোন benefits পাব না? না। আপনি যদি সত্যি কাজ জেনে থাকেন আবার বলছি আপনি যদি সত্যি সত্যিই কাজ জেনে থাকেন,তাহলে আপনি ইংশাল্লাহ ফ্রিলান্সিং সেক্টরে আপনার একটা অবস্থান তৈরী করে নিতে পারবেন। শুধু প্রচলিত ধারার বাইরে এসে একটু ভিন্নভাবে পথ চলতে হবে। নিজেকে একটু অন্যভাবে জাহির করতে হবে যে “আমি অমুক কাজের এক্সপার্ট,আমি অমুক কাজ খুব ভালো পারি”। এমন অবস্থা সৃষ্টি করতে হবে যে স্বয়ং ক্লাইন্টই আমাকে খুজে নেবে। সেটা কেমনে??
আচ্ছা একটি বিষয় খেয়াল করেছেন কি? আমেরিকান/কানাডিয়ান,অস্ট্রেলিয়ান ইত্যাদি দেশের ক্লাইন্টরা আমাদের দেশের লোকদের দিয়ে কেনো কাজ করায়?তাদের দেশেই তো আরো ভালো ওয়ার্কার আছে। কিন্তু তারপরেও আমাদের দেশের ওয়ার্কার দিয়ে কেন কাজ করায়? কারন,আমাদের দেশে কাজের রেট অনেক কম। এখানে আমি এসইও এর উদাহরণ দিয়ে পুরো বিষয়টি বুঝানোর চেস্টা করব।আপনারা যার যার কাজের সাথে একটু কস্ট করে মিলিয়ে নিয়েন।
একটু ভাবুন,ধরেন একজন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাবশায়ী লোক তার business এর জন্য এসইও করাবে।সে কী করবে?সে হয়ত প্রথমেই গুগলে সার্চ করবে ”seo service provider” বা seo service provider in Australia”। আর একটু মিতব্যায়ী হলে হয়ত সার্চ করবে “ lowest seo worker” “cheap seo service provider” ইত্যাদি লিখে।
কারন,সে নিতান্তই একজন ব্যাবশায়ী।তার আপওয়ার্ক,ফাইবার ইত্যাদি সম্পর্কে হয়ত ধারনাই নেই।তাই প্রথমত সে হয়ত গুগলের সাহায্যই নিবে। আর আপনি যদি এইসব কী-ওর্য়াডে ১ম পেইজে আসতে পারেন(শীর্ষে না থাকলেও হবে)। তাহলে??যারা এসইও জানেন তারা হয়ত ঠিকই বুঝে গেছেন তাহলে কী হবে? আর যদি তার বাংলাদেশের এসইও ওয়ার্কারদের কম রেটের কথা জানা থাকে।
হয়ত বেশীরভাগেরই জানা থাকে। কারন,জানা থাকে বলেই তারা ওদের দেশ বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার হায়ার করে।তারা হয়ত লিখে সার্চ করবে “SEO service provider in Bangladesh” “SEO expert in Bangladesh” “seo specialist in Bangladesh” ইত্যাদি লিখে।আর তার প্রমান নিচে দেখুন-একটু মনোযোগ সহকারে বুঝার চেস্টা করুন।
উপরোক্ত ৬টি কী-ওয়ার্ড নিয়ে গুগলে প্রতি মাসে মোট সার্চ হয়(২৬০+৫৯০+১১০+১৪০+৫৯০+৭০) =১৭৬০ টি
তাহলে প্রতি ৫ মাসে সার্চ হয় ৮,৮০০।কারন,একটা এসইও ফুল প্রজেক্ট শেষ করতে generally ৫ মাস লাগে।তারমানে,একজন ফুল-টাইম এসইও ওয়ার্কারের প্রতি ৫ মাস অন্তর একজন নতুন ক্লাইন্ট লাগে। অর্থ্যাত,একজন এসইও ওয়ার্কারের প্রতি ৫ মাসে একজন ক্লাইন্টই যথেস্ট।এখন কথা হচ্ছে আপনি কি প্রতি ৫ মাসে যেখানে মোট ৮৮০০টি সার্চ হয় সেখান থেকে একজন ক্লাইন্টও পাবেন না!!
আমার হিসাবটা কি বুঝতে পেরেছেন??আরেকটু সহজ ভাষায় বলি- বাংলাদশের ৮,৮০০ জন এসইও ওর্য়াকারের কর্মসংস্থান হতে পারে শুধুমাত্র গুগলেই। তাহলে যেখানে গুগলেই বাংলাদেশের ৮,৮০০জন এসইও ওয়ার্কারের কর্মসংস্থান হতে পারে,তাহলে কী দরকার মার্কেটপ্লেসে দিনের পর দিন অসহায় এর মতো বিনা কাজে পড়ে থাকার??কোন দরকার নাই।
আরে ভাই প্রচলিত ধারা থেকে বের হয়ে এসে ৮০ বিলিয়নের এসইও মার্কেটে নিজের অবস্থান তৈরী করতে পারেছেন না।অথচ নিজেরে এসইও স্পেশালিষ্ট হিসাবে দাবি করছেন?
আরে,আপনি যদি নিজের…সেলফ এসইও..ই করতে না পারেন,তাহলে কীসের এসইও ওয়ার্কার??
এখন আপনি যদি এইসব লো-কম্পিটিটিব কী-ওর্য়াডেও ১ম পেইজে রাঙ্ক করতে না পারেন,তাহলে আমি বলব আপনি এসইও ওয়ার্কারই নন।তাছাড়া এই ইন্টারনেট নির্ভর বাংলাদেশেই বর্তমানে অনেক বিজনেস কোম্পানি আছে যারা নিজেদের সাইটের এসইও করাতে চায়। তারাও গুগলে সার্চ করে এসইও ওর্য়াকার খোজার জন্য। এক্ষেত্রে আপনি লোকাল মার্কেটেই কাজ পেয়ে গেলেন।যেটা করা তুলানামূলক অনেক সহজ।এক্ষেত্রে কমনিকেশন স্কিল দুর্বল হলেও সমস্যা হবে না,আর পেমেন্ট গ্রহনও হবে সহজ।
এখন আরেক প্রশ্ন হলো কাজ না হয় পেলাম কিন্তু পেমেন্ট গ্রহন করব কেমনে??আমাদেরতো পেপাল-টেপাল কিচ্ছু নাই।সমাধান টা একেবারেই সহজ। আপনি just আপনার ওয়েবসাইটে নিজের স্কাইপ,ইমু,whatsapp,facebook ইত্যাদি প্রোফাইল এর লিঙ্ক দিয়ে দেন। ক্লাইন্ট যোগাযোগ করলে তাকে আপনার fiverr,upwork প্রোফাইলের লিঙ্ক দিয়ে দিন এবং তাকে fiverr,upwork এ আসতে বলেন। সহজ,এক ডিলে দুইপাখি।
আবার প্রশ্ন এসে গেলো,ওয়েবসাইট?? আমি তো নতুন/আমারতো কোন নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই।নেইতো করে নিন।বাংলাদেশে এখন অনেক ওয়ার্কার ফ্রেন্ডলী ডোমেইন-হোস্টিং প্রোভাইডার আছে।যেখানে ২০০০ টাকার ভিতরেই পাবেন ৫০ জিবি হোস্টিং সাথে আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ ও .COM ডোমেইন।
একজন ফ্রিলান্সার ওয়ার্কার এর সেলফ ব্রেন্ডিং এর জন্য পারফেক্ট ওয়েবসাইট।কিছু পেতে হলে ন্যুনতম হলেও আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে।সুতরাং দেরি না করে আজকে থেকেই নিজের ওয়েবসাইট বিল্ড-আপ করা শুরু করেন আর সেখানে নিজের কাজ নিয়ে পারফেক্ট একটা দোকান সাজিয়ে ফেলুন।
যার দরকার সেই আপনাকে নক করবেন।মনে রাখবেন দেরী করলেই কিন্তু পিছিয়ে যাবেন।যেমন,মার্কেটপ্লেসে পিছিয়ে গেছেন।আবার প্রশ্ন এসে যায়,এরকম হোস্টিং-প্রোভাইডার কোম্পানি কই পাব?বাংলাদেশেই পাবেন। যেমনঃ web hosting Bnagladesh
অনেকে আবার webhostbd, bdserverhosting,ehost,besthostingbd ইত্যাদি সাইট থেকেও ডোমেইন-হোস্টিং নিতে পারেন।তবে এরা এত স্পেস আর সার্ভিস দিবে না।আর সেলফ ব্র্যান্ডিং করার জন্য ভালো স্পেস এর Hosting আর unlimited bandwidth অনেক প্রয়োজনীয়।
কেননা,আপনাকে সেখানে client কে আকৃষ্ট করার জন্য high quality HD video দেওয়া লাগবে। কেমনে ভিডিও তৈরী করব? youtube এ একটু খুজেন পেয়ে যাবেন ইংশাল্লাহ।
এবার যারা ওয়েব-ডিজাইনার তাদের হিসাবটা একটু দেখাই-
অনুরুপভাবে,গ্রাফিক্স ডিজাইন,ডাটা এন্ট্রি,web development ও অন্যান্য কাজের হিসাবটা আশা করি নিজেরাই করতে পারবেন। আমি মূলত একজন এসইও ওয়ার্কার তাই অন্যন্যা কাজের হিসাবটা ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা সহ করতে পারলাম না। সবার জন্য রইলো অনেক অনেক শুভকামনা। কারো যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে বিনা-দ্বিধায় আমাকে করে ফেলুন-
ফেইসবুকে আমি-