ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক এর খুঁটিনাটি জেনে নিন!
ভোরবেলা বাহিরের হিমেল হাওয়া আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় শীতের আগমনী বার্তা। এর সাথেই চলে আসে শীতের পুর্ব প্রস্তুতি। ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে আমাদের ছোটোখাটো অনেক দিকগুলো মাথায় রাখতে হয় যেমন: শীতের গরম কাপড় পড়া, গরম পানি হাতের নাগালে রাখা, অতিরিক্ত ধুলোবালির হাত থেকে ঘরকে রক্ষা করা ইত্যাদি। এর মধ্যে শীতের মৌসুমে গরম পানিটা আমার চাই ই চাই। বাহিরে গরম পানি বহন করার জন্য আমার কাছে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো “ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক“। কারণ এর মাধ্যমে আমি শুধু গরম পানি ই না চা, কফি ইত্যাদি খুব সহজেই গরম গরম পান করতে পারি।

চলুন জেনে নেই কিভাবে একটি ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক এর সর্বোত্তম ব্যবহার করা যায়-
আপনিও যদি হন আমার মতো চাকুরীজীবি অথবা ভ্রমণপ্রেমী তাহলে বুঝতেই পারছেন গরম বা শীতের দিনের সাথী হিসেবে ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক আমাদের কতটা উপকার করে।
১. ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক আমাকে শীতের দিনে বার বার পানি, চা, কফি গরম করার ঝামেলা থেকে বাচিয়ে দেয়।
২. গরমেও বাহিরের অস্বাস্থ্যকর ঠান্ডা পানি, জুস ইত্যাদি পানীয় পান থেকে নিজেকে রক্ষা করে কারণ ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক এ আপনি চাইলেই বাড়িতে বানানো স্বাস্থ্যকর পানীয় রেখে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী পান করতে পারবেন যেটা সবসময় আমি করি।
৩. ফ্লাস্কে পানীয় রেখে ভালোভাবে এর মুখটা আটকিয়ে দিতে হবে যাতে করে বাইরের বাতাস না ঢুকতে পারে। এতে ভিতরে রাখা পানীয় এর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে।
৪. প্রতিবার ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক ব্যবহার করার পর আমি ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে রাখি কারণ তা নাহলে ফ্লাস্ক থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৫. যদিও ডিজাইনের কারণে ফ্লাস্কের নীচে পর্যন্ত পরিষ্কার করা ঠিকমতো হয়ে উঠেনা তাই আমি একটি ব্রাশ ব্যবহার করি যা ফ্লাস্কের ভিতরে সহজে ঢুকিয়ে সবটুকু জায়গা পরিষ্কার করা যায়।
ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক কেনার আগে যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখবেন
সাধারণত, ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক কেনার আগে কিছু দিক বিবেচনা করেই কেনা উচিত। আমি যে বিষয়গুলি মাথায় রেখেছি তা হলো-
বাজারে সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিন্ম রেঞ্জের মধ্যে বিভিন্ন ডিজাইনের ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক দেখেছি আমি। ব্র্যান্ড, ক্যাপাসিটি, ফিচার অনুযায়ী একেক ফ্লাস্কের দাম একেক রকমের হয়ে থাকে।নন-ব্র্যান্ডের ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক গুলো ১০০০ টাকার নিচেই পেয়ে যাবেন কিন্তু আমি সবসময় ব্র্যান্ড প্রেফার করি কারণ এর কোয়ালিটি সম্পর্কে নিশ্চিন্ত থাকা যায়।
সাধারণত, সর্বনিন্ম ১৪০০ – ৪০০০ টাকার মধ্যেই আপনি একটি ভালো ব্র্যান্ড এর ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক পেয়ে যাবেন সহজেই। কোন ফাস্কটি আসলেই কতটা ভালো এবং কেমন কাজ করে তার ভাল ধারণা পেতে কাস্টমারদের (যারা আগে কিনেছেন তাদের) সাথে পর্যালোচনা করে নেয়া ভালো।
তরল খাবার
আমি মূলত ফ্লাস্ক কিনেছি বার বার চা, কফি গরম পানি করার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবার জন্য কিন্তু আপনি চাইলে প্রাথমিকভাবে এতে স্যুপ এবং অন্যান্য তরল-ভিত্তিক খাবার রাখতে পারবেন সেক্ষেত্রে ফিচার গুলি ভালোভাবে দেখে নিবেন।
ক্যাপাসিটি
ক্যাপাসিটি আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ফিচার কারণ আমি কত টুকু পানীয় ফ্লাস্কের মধ্যে রাখতে পারবো তা এর উপর নির্ভর করে। ফ্লাস্কের ক্যাপাসিটি সাধারণত ছোটগুলো ৩০০ মিলিলিটার থেকে এবং বড়গুলো ৭০০ মিলিলিটার থেকে শুরু হয়। আমার প্রয়োজন অনুযায়ী আমি ১ লিটারের ফ্লাস্ক নিয়েছি। আপনিও কিনে নিতে পারেন আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী একটি।
তাপ ধারণক্ষমতা
ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্কে পানীয় ঠান্ডা বা গরম থাকার স্থায়িত্ব কতটুকু সময় পর্যন্ত থাকবে সেটা অবস্যই দেখে নিবেন। সাধারণত, একটি ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক ৪-৫ ঘন্টা থেকে ১২-১৫ ঘন্টা পর্যন্ত পানীয় ভ্যাকুয়াম করে রাখে।
ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্কে যে ভুলগুলো করা উচিত না
ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক ব্যবহার অথবা পরিষ্কার করার সময় আমরা কিছু ভুল করে থাকি, (যা প্রথমে আমিও করেছিলাম) যার কারণে ফ্লাস্কের স্থায়িত্ব নষ্ট হয়ে যায়! চলুন জেনে নেই সেই ভুলগুলো কি হতে পারে-
১. পানি সহ ফ্লাস্ক স্টোর করবেন না ভালোভাবে শুকিয়ে নিন এবং ফ্লাস্কের সুইচ অফ না করে স্টোর করবেন না ।
২. ডিসওয়াশারে কখনো ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক ধুতে যাবেন না।
৩. কোনও কার্বনেটেড পানীয় সংরক্ষণ করবেন না কারণ এর ফলে ফ্লাস্কের মুখটা খুলার সময় জোরে ছিটকে পড়তে পারে।
৪. ফ্লাস্কে দুধ বা শিশুর খাদ্য গরম বা শীতল রাখার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এর ফলে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির কারণ হতে পারে আপনার ফ্লাস্কে।
৫. গরম পানীয় ফ্লাস্কে রাখলে তা শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
যদি টিউটোরিয়ালটি আপনার কাছে ভালো লাগে Subscribe করতে ভুলবেন না।
আপনি যদি চান আমাদের ওয়েব সাইটে নতুন পোস্ট হওয়ার সাথে সাথে আপনাকে আমরা ইমেইলের মাধ্যমে জানাবো তাহলে Subscribe করুন।
This title last post
৭৯৪ বার পঠিত | ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮ | ৫:২৯ PM