একদম বাজেট এর ভেতর দারুন একটি স্মার্টফোন কিনতে চাইলে (Primo GH7) প্রিমো জিএইচ৭ আপনার জন্য। আপনার বাজেট যদি ৬০০০ টাকার মত হয় আর আপনি স্মার্টফোন কিনতে চাচ্ছেন ; তবে চোখ বন্ধ করে প্রিমো জিএইচ৭ (Primo GH7) কিনে নিতে পারেন। মূলত এই স্মার্টফোনে ওয়ালটনের মূল ফিচার পয়েন্ট হল এই ১৮:৯ রেসিও ডিসপ্লে। বাংলাদেশে এই দামে একমাত্র ওয়ালটন সাধারন ক্রেতাদের ১৮:৯ রেসিও ডিসপ্লে এর মজা দেওয়ার জন্য এই স্মার্টফোনটি বাজারে এনেছে।

এক নজরে প্রিমো জিএইচ ৭(Primo GH7)

  • ৫.৪৫” ফুল ভিউ (১৮:৯ রেসিও) IPS ডিসপ্লে
  • ২.৫ডি কার্ভড ডিসপ্লে
  • অ্যান্ড্রয়েড ৭.০ নগাট
  • ১.৩ গিগাহার্জ কোয়াড কোর প্রোসেসর
  • রিয়ার ৮ মেগাপিক্সেল অটোফোকাস (সাথে এলইডি ফ্ল্যাস)
  • ফ্রন্ট ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা (সাথে সফট-এলইডি ফ্ল্যাস)
  • ২৫০০ এমএএইচ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি

ওয়ালটন প্রিমো জিএইচ ৭ ডিভাইসটির বক্স আনবক্স করলে আমরা যা যা পাবঃ

  • প্রিমো জিএইচ৭ ডিভাইসটি
  • একটি ট্রান্সপারেন্ট ব্যাক কভার
  • ওয়ারেন্টী কার্ড ও ইউজার ম্যানুয়াল
  • একটি চার্জার এডাপ্টার ও ইউএসবি ক্যাবল
  • একটি মিডিয়াম কোয়ালিটি হেডফোন

হার্ডওয়্যার

স্পেসিফিকেশন এর কথা বলতে গেলে এই বাজেট এর ডিভাইস থেকে বেশি কিছু আশা করা বোকামী ছাড়া আর কিছু নয়। এই দামের অন্যসব ওয়ালটন স্মার্টফোনের মতই এতে রয়েছে মিডিয়াটেকের MT6580 চিপসেট। যেটি চার কোর বিশিষ্ঠ একটি কোয়াড কোর সিপিইউ। গ্রাফিক্স প্রোসেসিং ইউনিট হিসেবে রয়েছে Mali 400 জিপিইউ।

সম্পূর্ণ সিস্টেমকে ব্যাকআপ দিবে একটি ১ জিবি র‍্যাম । এটি একটি DDR3 র‍্যাম । কিছু অ্যাপলিকেশন ইনস্টল থাকা অবস্হায় ৯৬৩ এমবি র‍্যাম এর ভেতর ৩৮১ এমবি এর মত ফাকা ছিল। ডিভাইসটির ৮ জিবি ইন্টারনাল মেমোরীর ভেতর ৩.৭৩ জিবি ব্যবহারযোগ্য। তাছাড়াও ৩২ জিবির ওপরে মেমোরী কার্ড সাপোর্ট করবে ডিভাইসটি।গীকবেঞ্চ অ্যাপে সিঙ্গেল কোরে এর স্কোর এসেছে ৪১৪। আর মাল্টি কোরে এর স্কোর এসেছে ১২৩২।

ইউজার ইন্টারফেস

ডিভাইসটিতে অ্যান্ড্রয়েড এর নগাট ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখানে ইউজার ইন্টারফেসে ব্যবহারকারী পুরোপুরি স্টক এর স্বাদ পাবেন। তবে আইকনগুলো অনেকটা কাস্টমাইজড। ভিতরে কিছু ফাংশন স্টক থেকে বিপরীত এবং কাস্টমাইজড।

 

 

ডিসপ্লে এবং বডি

ডিভাইসটির মূল আকর্ষনীয় বিষয় হল এর ১৮:৯ রেসিও ডিসপ্লে। অ্যান্ড্রয়েড ৭.০ নগাট হওয়ার ফলে এই ডিসপ্লেতে মাল্টি টাস্কিং করে অনেক মজা পাওয়া যাবে। তাছাড়াও এইচডি মুভি, গেমিং এর ক্ষেত্রে এই ডিসপ্লেতে পাওয়া যাবে আরও ভালো অভিজ্ঞতা। ডিসপ্লেটির রেজুলেশন ৯৬০*৪৮০পিক্সেল এবং এটি ২৬M কালার সাপোর্টেড। তারপর ২.৫ডি কার্ভড হওয়ার ফলে এটি স্মার্টফোনটির ডিজাইনকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। ডিভাইসটির ক্যাপাসিটিভ টাচ প্যানেল ২ ফিংগার টাচ সাপোর্টেড। IPS ডিসপ্লে প্যানেল এবং পিক্সেল ডেনসিটি ১৯৯ হওয়ার ফলে ভিউইং তুলনামূলক ভাবে ভালোই পাওয়া যাবে। ডিসপ্লে সেটিংস এর জন্য রয়েছে মিরাভিশন টেকনোলজি।

ডিভাইসটির উচ্চতা ১৪৮.৮ মিলিমিটার এবং প্রস্থ ৭১.৮ মিলিমিটার। ডিভাইসটির পুরুত্ব ৮.৯৫ মিলিমিটার। ব্যাটারিসহ এই ডিভাইসের ওজন মাত্র ১৭৬ গ্রাম। ডিভাইসটি বাজারে ৪ টি কালার; কালো, নীল, সোনালি এবং ধূসর কালারে পাওয়া যাবে। এখানে কালো এবং নীল আর্কষনীয়, বিশেষ করে কালো কালার। ডিভাইসটির আপার প্যানেলে একটি হেডফোন জ্যাক ও ইউএসবি পোর্ট রয়েছে। বটম প্যানেলে রয়েছে মাইক্রোফোন। আর ডান সাইডে রয়েছে ভলিউম কন্ট্রোলার ও পাওয়ার অন-অফ বাটন। ডিভাইসটির ফ্রন্ট প্যানেলে ওপরের দিকে একটি নোটিফিকেশন লাইট রয়েছে।

এখানে কেবল ২৫০০ এমএইচ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি দেওয়া হয়েছে। তবে ডিসপ্লে বড় যেহেতু এতে অন্তত ৩০০০ এমএএইচ ব্যাটারি দিলে ভালো হত। তাছাড়া ডিভাইসটি থেকে ভালো ব্যাকআপ পেতে দিনে অন্তত ২ বার চার্জে লাগাতে হবে। ফোনের ভেতর বিল্ট ইন ব্যাটারি সেভার অপশন রয়েছে।

ক্যামেরা

ডিভাইসটির রিয়ার প্যানেলে রয়েছে একটি ৮ মেগাপিক্সেল BSI সেন্সর যুক্ত অটোফোকাস ক্যামেরা। এর সাথে রয়েছে ৪পি লেন্স। আর এই ক্যামেরাটিতে ফেস ৪x ডিজিটাল জুম, সেলফ টাইমার, কোন্টিনিউয়াস ফোকাস, টাচ ফোকাস এর মতন ফিচারস রয়েছে। ক্যামেরা সেটিংস হিসেবে রয়েছে: এক্সপোসার কন্ট্রোল,হোয়াইট ব্যালেন্স, আইএসও ব্যালেন্স, স্যাচুরেসন,ম্যানুয়াল ফোকাস। শুটিং মোড হিসেবে রয়েছে: নরমাল মোড, পোর্টেট মোড, প্রোফেশনাল মোড,ফেস বিউটি,এইচডিআর,প্যানারোমা,ফিল্টার মোড এবং সীন ফ্রেম মোড।

সামনে ফ্রন্ট ক্যামেরা হিসেবে রয়েছে আরেকটি ৫ মেগাপিক্সেল BSI সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা। এই ক্যামেরাতে যে যে ফিচার রয়েছে সেগুলি হল: ফেস ডিটেকশন, ডিজিটাল জুম এবং সেলফ টাইমার। শুটিং মোড হিসেবে রয়েছে: নরমাল মোড, ফেস বিউটি,এইচডিআর এবং সীন(দৃশ্য) মোড। এই ক্যামেরার সাথে একটি সফট ফ্ল্যাস লাইট রয়েছে, যা কিনা কম আলোতে সেলফি তুলতে কাজে আসবে।

 

দাম হিসেবে এই ডিভাইসটি সবদিক দিয়ে বলতে গেলে মোটামোটী। বিশেষ করে ১৮:৯ এক্সপেক্ট রেসিও এর মূল আকর্ষন। এই এক্সপেক্ট রেসিওর মজা কম দামে নিতে চাইলে এই স্মার্টফোনটি তাদের জন্য। হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন দুর্বল হওয়ায় ৪জি থাকছে না তা বোঝাই যায়। তবুও এ সময় ৪জি কানেক্টিভিটটি ছাড়া ফোন তেমন মানায় না। যাই হোক ওয়াইফাই,ব্লুটুথ,জিপিএস এসব তো থাকছেই। ডিভাইসটির স্মার্ট জেস্চার এবং ডুয়াল স্প্লিট স্ক্রীন খুবই ব্যবহার বান্ধব।