সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন আপনারা? আশা করছি পরম করুনাময়ের অশেষ রহমতে ভালোই আছেন।আমিও সেই মহান সত্ত্বার অশেষ রহমত এবং আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি, আলহামদুলিল্লাহ। শিরোনাম দেখে আপনারা নিশ্চয়ই আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়ে গেছেন। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল প্রসঙ্গে আসা যাক।
কালার কোড দ্বারা খুব সহজেই আমারা মিটার ছাড়ায় যে কোন রেজিস্টরের মান নির্ণয় করতে পারি। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে কালার কোড কি? উত্তর হল, প্রতিটা রেজিস্টরের গায়ে বিভিন্ন প্রকার রঙ দ্বারা চিহ্নিত করা থাকে এগুলোকে কালার কোড বলে। কালার কোডের প্রতিটি প্যাচকে ব্যান্ড বলে। রেজিস্টর সাধারনত ৪(চার) ব্যান্ডের বেশি হয়ে থাকে, এছাড়াও ৫ ও ৬ ব্যান্ডের রেজিস্টরও পাওয়া যায়। এখানে সাধারনত ১২ প্রকার কালার ব্যবহার করা হয়। যেগুলো হলঃ কালো, বাদামী, লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, বেগুনি, ধূষর, সাদা এছাড়াও টলারেন্স এর জন্য সোনালী ও রুপালী কালার ব্যবহার করা হয়। সংক্ষেপে এই কালার গুলোকে বলা হয়ঃ কা, বা, লা, ক, হ, স, নী, বে, ধূ, সা। প্রতিটি বিভিন্ন ব্যান্ডে বিভিন্ন মান রয়েছে তা নিচে একটি চার্টের মাধ্যমে দেখানো হল। (এই চার্টটাই হইল আসল মাল এইডা বুঝন কম্পুলসারি)
এই চার্টটা আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে। এখন কাজে আসা যাক। কিভাবে আমারা রেজিস্টর মাপব? মনে করি আমার কাছে এই রেজিস্টরটা আছে
সবার আগে আপনাকে রং চিনতে হবে। আপনি নিজে না চিনতে পারলে আপনার ওয়াইফ বা জিফ এর সাহায্য নিন কারণ মেয়েরা কালারের ব্যাপারে ছেলেদের চেয়ে বেশি এক্সপার্ট। উপরের রেজিস্টরটা ৪ কালার ব্যান্ডের একটি রেজিস্টর । অর্থাৎ এখানে ৪ টি কালার আছে। ১ নং ব্যান্ডের রং বাদামী, ২ নং ব্যান্ডের রং কালো, ৩ নং ব্যান্ডের রং লাল ৪ নং ব্যান্ডের রং সোনালী।
তাহলে আমরা এখন হিসাব করি। চার্টের দিকে তাকায়। এখানে দেখি বাদামী রঙের ১ম মান কি আছে? বাদামীর ১ম মান =১, এরপর কালো, এর দ্বিতীয় মান= ০, তারপর লাল, লালের ৩য় মান= ×১০০। মান দেখা শেষ। এবার ক্যালকুলেশন, নিয়ম হল প্রথম ও ২য় মান পরপর বসে যাবে এবং ৩য় মান গুন হিসাবে বসবে অর্থাৎ,
১০×১০০=১০০০ Ω=১KΩ[ যেহেতু ১০০০Ω = ১KΩ।]
সহজ বুদ্ধি হল তিনটা মান সিরিয়ালে বসিয়ে দিবেন। কিছু বুঝলেন? নিশ্চয় বুঝেছেন। না পারলে নিচের চিত্রটি দেখুন। আর ৪র্থ ব্যান্ড ব্যবহার হয় রেজিস্টরের টলারেন্স নির্ণয়ের জন্য। এখানে ৪ নং ব্যান্ডের কালার সোনালী, সোনালীর ৪র্থ মান ±১০%। অর্থাৎ কাজক্ষেত্রে আমারা ১০০০ Ω বা ১KΩ ১০% কম বা বেশি মানের রেজিস্টর ব্যবহার করতে পারব।
আচ্ছা এবার আমরা আর একটা রেজিস্টরের মান নির্ণয় করি।
এখানে প্রথম, ২য় ও ৩য় ব্যান্ডের কালার যথাক্রমে বাদামী, লাল এবং কমলা। চার্ট আনুযায়ী আমারা হিসাব করি। বাদামীর ১ম মান ‘১’ লালের ২য় মান ‘২’ এবং কমলার দ্বিতীয় মান ‘×১০০০’। তাহলে হিসাব নিকাশ দাঁড়ায় ১২×১০০০=১২০০০Ω = ১২KΩ[ যেহেতু ১০০০Ω = ১KΩ।]
৫ ব্যান্ড কালার কোড প্রায় একই রকম। এখানে ১ম, ২য় ও ৩য় মান একত্রে(পাশাপাশি) বসবে ৪র্থ ব্যান্ডের মান গুণিতক হিসাবে বসবে। ৫ম ব্যান্ড রেজিস্টরের টলারেন্স নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয় ।
আচ্ছা একটা ৫ ব্যান্ডের রেজিস্টর দেখি ও এর মান নির্ণয় করি।
উপরে দেখতে পাচ্ছি ১ম ব্যান্ডের রঙ লাল(২), ২য় ব্যান্ডের রঙও লাল (২), ৩য় ব্যান্ডের রঙ কাল (০), ৪র্থ ব্যান্ডের রঙ লাল(গুণিতক ১০০)। তাহলে আমরা হিসাব করে দেখতে পাচ্ছি যে ২২০×১০০ = ২২০০০KΩ এবং ৫ম ব্যান্ডের কালার দ্বারা এর টলারেন্স দেখান হয়েছে।
নিচের ভিডিওটি দেখলে কালার কোড দেখে রেজিস্টরের মান নির্ণয়ের পদ্ধতিটি আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন বলে আশা করি।
ভিডিও লিংক: Resistor color code Bangla
শেষ কথাঃ
আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কিঞ্চিৎ ভালো লেগে থাকে তাহলে social media তে শেয়ার করুন। পোস্টে আলোচিত কোন বিষয় বুঝতে যদি কারও কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাকে মন্তব্য করার মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কারন আপনাদের যেকোন ধরনের মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে উৎসাহিত করবে। পরিশেষে সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবারো কথা হবে আগামীতে অন্য কোন দিন অন্য কোন আর্টিকেলে, সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন আমি আরও ভালো মানের আর্টিকেল আপনাদের উপহার দিতে পারি,
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহ
আর্টিকেলটি সামু থেকে সংগৃহীত
যেকোনো প্রয়োজনে: ফেসবুকে আমি