আপনার ফোন ৩জি বলে নতুন ৪জি এর মজা নিতে পাচ্ছেন না । নতুন স্মার্টফোন কেনার কথা ভাবছেন? আজকে এক্তা বাজেট ৪জি স্মার্টফোন সম্পর্কে জানব । ওয়ালটন এর নতুন ৪জি স্মার্টফোনটির নাম হল ওয়ালটন প্রিমো আরএইচ৩ (primo rh3)। ডিভাইসটি ৪জি এনেবলড হওয়ার পাশাপাশি এটি অনেক স্টাইলিস একটি স্মার্টফোন। আজ আমরা এই স্মার্টফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

একনজরে Primo RH3

  • ১.২৬ গিগাহার্জ কোয়াড কোর প্রোসেসর
  • ২ জিবি Ram
  • ১৬ জিবি রম
  • সামনে-পিছনে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা
  • ৪জি কানেক্টিভিটি
  • ২৬০০ এমএএইচ লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি
  • অ্যান্ড্রয়েড ৭ নগাট অপারেটিং সিস্টেম

 

দেখতে প্রিমিয়াম এবং আকর্ষনীয় এই স্মার্টফোনটি বাজারে কেবল পাওয়া যাবে কালো কালারে। আর ডিভাইসটির বাজার দাম নির্ধারন করা হয়েছে মাত্র ৯৬৯০ টাকা। Primo RH3 স্মার্টফোন/ডিভাইসটির বক্স আনবক্সিং করলে যা যা পাওয়া যাবেঃ

  • প্রিমো আরএইচ৩ (Primo RH3) ডিভাইস
  • একটি মিডিয়াম কোয়ালিটি হেডফোন
  • একটি সীমকার্ড ইজেক্টর টুল
  • একটি ট্রান্সপারেন্ট ব্যাককভার
  • পাওয়ার এডাপ্টার
  • ইউএসবি ক্যাবল
  • ওয়ারেন্টী কার্ড ও ইউজার ম্যানুয়েল

 

ইউজার ইন্টারফেস

ডিভাইসটিতে অ্যান্ড্রয়েড এর নগাট ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখানে ইউজার ইন্টারফেসে ব্যবহারকারী পুরোপুরি স্টক এর স্বাদ পাবেন। তবে আইকনগুলো অনেকটা কাস্টমাইজড। ভিতরে কিছু ফাংশন স্টক থেকে বিপরীত এবং কাস্টমাইজড।

হার্ডওয়্যার

এই ডিভাইসটিতে ব্যবহার করা হয়েছে মিডিয়াটেক এর mt3767 চিপসেট। এটি ৪ কোর বিশিষ্ঠ একটি কোয়াডকোর চিপসেট। যার ক্ষমতা ১.২৫ গিগাহার্জ। এটি একটি ৬৪ বিট চিপসেট। গ্রাফিক্স প্রোসেসর এবং রেন্ডারার হিসেবে এই স্মার্টফোনটিতে রয়েছে এআরএম(ARM) এর মালি টি৭২০ চিপসেট। সিস্টেমকে ব্যাকআপ দিবে ২জিবি Ram। যেখানে কিছু অ্যাপ ইনস্টল করা অবস্থায় মোট ১৮৬৭ এমবি Ram এর ভেতর ৯০১ এমবি ফাকা থাকে।

ডিভাইসটির ১৬ জিবি রম এর ভেতর ৯.৮৮ জিবি ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়াও এতে ১২৮ জিবি পর্যন্ত এসডি কার্ড ব্যবহার করা যাবে। সেন্সর হিসেবে এতে অ্যাক্সেলেরোমিটার, গ্র্যাভিটি, প্রক্সিমিটি, ফিংগার প্রিন্ট ইত্যাদি সেন্সর থাকছে।হার্ডওয়্যার গত দিক দিয়ে উন্নত হওয়ার কারনে বেঞ্চমার্কের দিক দিয়েও এই ডিভাইসটি এগিয়ে। এনটুটু বেঞ্চমার্কে এর স্কোর দাড়িয়েছে ৩৬৫৩৮; এবং গীকবেঞ্চে সিঙ্গেল কোর স্কোর ৫৭২ মাল্টি কোরে স্কোর এসেছে ১৫৩৪।

 

ডিসপ্লে এবং বডি

ডিভাইসটিকে আরও স্লিম করার জন্য এতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫ ইঞ্চি আইপিএস অন-সেল ডিসপ্লে; পিক্সেল ডেনসিটি ৩২০ পিপিআই। এটি একটি এইচডি তথা হাই ডেফিনেশন ডিসপ্লে যার রেজুলেশন ১২৮০*৭২০ পিক্সেল।তবে অনস্ক্রীন বাটন বাদ দিলে ডিসপ্লে সাইজ ৪.৬ ইঞ্চি। ডিভাইসটি ৫ মাল্টিফিংগার টাচ সাপোর্টেড। আইপিএস ডিসপ্লে হওয়ার কারনে নি:সন্দেহে ভিউইং অ্যাঙ্গেল নিয়ে কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। ডিসপ্লেটি সাইড দিয়ে ২.৫ ডি কার্ভড হওয়ার কারনে স্মার্টফোনের প্রিমিয়ামনেস এটি বাড়িয়ে দিয়েছে আরেকটু বেশি।

ডিসপ্লে ২.৫ ডি কার্ভড এবং ব্যাক পার্ট বাকানো হওয়ার কারনে ; স্মার্টফোনটি হাতে নিলে সাইড দিয়ে সুন্দর একটি রাউন্ড কাট অনুভব করা যাবে। রিয়ার প্যানেলে ক্যামেরা এবং ফ্ল্যাস মডিউল হল সম্পূর্ণ রিয়ার তথা ব্যাক প্যানেলটি দেখতে ট্রিপিক্যাল গ্যালাক্সি সিরিজের স্মার্টফোনের মত।

ডিভাইসটির আপার প্যানেলে রয়েছে ৩.৫ এমএম হেডফোন জ্যাক, ২.০ ইউএসবি পোর্ট এবং হেডফোন জ্যাক। আর লোয়ার প্যানেলে রয়েছে লম্বা স্পিকার গ্রিল। আর বাম সাইডে রয়েছে ভলিউম এবং পাওয়ার বাটন।

ডিভাইসটি লম্বায় ১৪৩.৫ মিলিমিটার, প্রস্থে ৬৯.৪ মিলিমিটার। ডিভাইসটির পুরুত্ব ৮.৫ মিলিমিটার। ব্যাটারিসহ এই প্রিমো আরএইচ৩ ডিভাইসটির ওজন ১৪৬ গ্রাম। ডিভাইসটিকে ব্যাক আপ দিবে একটি ২৬০০ এমএএইচ লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি,ব্যাটারিটি নন-রিমুভেবল। আর ডিভাইসটির ব্যাকপার্টও নন রিমুভেবল। স্মার্টফোনটির ফ্রন্ট প্যানেলে নিচের দিকে পাওয়া যাবে একটি ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর। যা এর ডিজাইন অনেক বাড়িয়ে তুলেছে।

 

ক্যামেরা

ডিভাইসটির সামনে এবং পিছনে উভয় জায়গায় ৮ মেগাপিক্সেল BSI সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা মডিউল ব্যবহার করা হয়েছে। এর রিয়ার ক্যামেরার এপার্চার ২.০। এই ক্যামেরায় এলইডি ফ্ল্যাস এবং অটোফোকাস এর মত সুবিধা বেশি পাওয়া যাবে। অন্যদিকে এপার্চার ২.২ যুক্ত ফ্রন্ট ক্যামেরায় এইসব ফিচার পাওয়া যাবে না। রিয়ার ক্যামেরার শুটিং মোড গুলো হলঃ প্যানারোমা, এইচডিআর,ফেস বিউটি এবং নরমাল মোড। ফ্রন্ট ক্যামেরার শুটিং মোড গুলো হলঃ এইচডিআর,ফেস বিউটি এবং নরমাল মোড। তবে ক্যামেরা দুটিতেই একই সেটিংস অপশন রয়েছে। এগুলো হল: এক্সপোসার কন্ট্রোল,হোয়াইট ব্যালেন্স, আইএসও ব্যালেন্স,ইমেজ প্রোপার্টিজ,কালার ইফেক্ট।

দুটি ক্যামেরাই ১২৮০*৭২০ পিক্সেল রেজুলেশনে ভিডিও রেকর্ড করতে পারে।

ক্যামেরা স্যাম্পল

 


ডিভাইসটিতে স্টক অ্যান্ড্রয়েড নগাট এর স্বাদ পাওয়া যাবে। আগেই বলেছি প্রায় সবকিছু স্টক এর মত হলেও এর আইকনগুলো বরাবরের মত কাস্টমাইজড। ক্যামেরা ইন্টারফেসটিও স্টক অ্যান্ড্রয়েড এর মত। ডিভাইসটি ৪জি বা LTE সাপোর্টেড। অন্যান্য ডিভাইস এর মত ওটিজি,জিপিএস ইত্যাদি ফিচার রয়েছে।

 

যারা মূলত কম দামে একটি ভালো মানের ৪জি স্মার্টফোন কিনতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য এই স্মার্টফোন। ৯৬৯০ টাকায় এই স্মার্টফোনের ফিচার গুলোকে খারাপ বলা যাবে না। আর দাম হিসেবে এর ডিজাইন যথেষ্ঠ প্রশংসনীয়। তবে ওয়ালটন কবে যে  মিডিয়াটেক এবং মালি এর স্পেসিফিকেশন থেকে বের হবে তা সবার প্রশ্ন !