বাসায় একটা ফ্রিজ থাকার প্রয়োজনীয়তা সবারই, উচ্চমধ্যবিত্ত থেকে নিম্নমধ্যবিত্ত সবাই উপলব্ধি করে এর থাকা না থাকার সুবিধা আর অসুবিধা। বিশেষ করে আমি ফ্রিজ ছাড়া একদিনও ছিলাম কথা কল্পনা করিনা। আমি আমার পুরনো ফ্রিজটি নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলাম এবং মনে মনে একটি ভালো ব্র্যান্ড এর ফ্রিজের কথা কেনার চিন্তাও করছিলাম।
ফ্রিজ কেনার আগে আমি যে দিকগুলো ভেবে দেখেছি
এক্সচেঞ্জ অফার হোক আর না হোক নতুন ফ্রিজ কেনার আগে আমাদের নিচের টপিকগুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। আমিও সবসময় এই দিকগুলো বিবেচনা করি ফ্রিজ কেনার আগে। চলুন জেনে নেই টপিকগুলো কি কি –
১।আমাদের দেশের বিভিন্ন ধরণের ফ্রিজ
বেশ কয়েক ধরণের ফ্রিজ আছে। আমাদের দেশে সবচাইতে বেশি প্রচলিত হলো টপ ফ্রিজার ধরণের ফ্রিজ, যেখানে ওপরের দিকে থাকে ফ্রিজার বা ডিপ ফ্রিজ এবং নিচে থাকে সাধারণ রেফ্রিজারেটর।
আপনি যদি মাছ-মাংস বেশি খান, তাহলে এটাই আপনার জন্য ভালো কারণ হাতের বাড়ালেই ডিপ খোলা যাবে। পুরনো মডেলে যদি আপনার আপত্তি না থাকে তবে এই ফ্রিজ আপনি কিনতেই পারেন।
আপনি যদি ফলমূল, সবজি খেতে পছন্দ করেন তাহলে কিনতে পারেন বটম ফ্রিজার ধরণের ফ্রিজ। এর ডিপ ফ্রিজ থাকে নিচে। এই ধরণের ফ্রিজগুলোও এখন বেশ প্রচলিত বাংলাদেশে।
একটু মডার্ন ধাঁচের কিছু কিনতে চাইলে কিনতে পারেন ফ্রেঞ্চ ডোর বা সাইড-বাই-সাইড ধরণের ফ্রিজ। এগুলোতে সদর দরজার মতো দুই পাল্লার দরজা থাকে। আপনার জীবনযাত্রার সাথে কোন ধরণের ফ্রিজ মানায়, সেটা ভেবেচিন্তে কিনবেন।
২। ফ্রিজ রাখার জায়গাটি আগে থেকেই ঠিক করে নিন
ফ্রিজ কিনে ফেললেই তো হলো না। এতো বড় একটা জিনিস ঘরে কোথায় রাখবেন, তার জায়গাটা ঠিক করে রাখতে হবে তো। আপনার ঘরে এটা রাখার জায়গা কতটুকু, তা ভেবে নিয়ে সেই আকৃতির ফ্রিজ কিনতে হবে। একেবারে গজফিতা দিয়ে মেপে নেবেন।
যেখানে ফ্রিজটা রাখছেন সেই জায়গাটা উপযুক্ত কিনা তাও ভাবতে হবে। এখানে কি ফ্রিজটা বছরের পর বছর রাখতে পারবেন, নাকি কিছুদিন পর আবার জায়গা বদলাতে হবে? ফ্রিজের দরজা খোলার সময়ে কোন দেয়াল, আসবাবপত্র বা দরজায় ধাক্কা খাবে কিনা এসব নিয়েও চিন্তা করে রাখুন আগেই।
৩। পরিবারের সদস্য সংখ্যা মাথায় রেখে ফ্রিজ কিনে নিন
আপনার পরিবার কী ছোট, না বড়? বড় পরিবারের জন্য বড়, টেকসই ফ্রিজ দরকার হয়। কিন্তু আপনি যদি ব্যাচেলর হয়ে থাকেন বা পরিবার হয়ে থাকে একেবারেই ছোট্ট, তাহলে আপনার ছোটখাটো টপ ফ্রিজার ধরণের ফ্রিজ কেনাই ভালো। এতে খরচ কম হবে।
৪। খাদ্যভ্যাস এর উপর নির্বাচন করেই রেফ্রিজারেটর কেনা উত্তম
আপনি কি ধরণের খাবার খেতে পছন্দ করেন? আপনি কি টাটকা খাবার খান? নাকি সপ্তাহে একবার রান্না করে কয়েকদিন ধরে ফ্রিজে রেখে খেতে চান? আপনার কি বেশি করে বরফ দরকার হবে?
রেফ্রিজারেটর কেনার সময়ে এসব ব্যাপারে চিন্তা করা আবশ্যক।
৫। পরিষ্কার করা সহজ এমন ফ্রিজ নির্বাচন করা ভালো!
রেফ্রিজারেটরের তাকগুলো সাধারণত দুই ধরণের হয়। একটা হয় সাধারণ ট্রে এর মতো, কাঁচ বা প্লাস্টিকের স্বাচ্ছ বা সাদা। আরেক ধরণের হয় তারের র্যাক। সাধারণ ট্রে এর মতো তাক মুছে নিলেই হয়ে যায়। কিন্তু তারের র্যাকগুলো পরিষ্কার রাখা বেশ ঝামেলা। এই ব্যাপারটা মাথায় রাখুন ফ্রিজ কেনার সময়ে।
আমাদের মধ্যে অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, বড় ফ্রিজে বিদ্যুৎ চাহিদা বেশি। কিন্তু এ ধারণা ভুল। মনে রাখবেন, দুটি ছোট ফ্রিজ চালানোর তুলনায় একটি বড় ফ্রিজ অনেক বেশি জ্বালানিসাশ্রয়ী ও সস্তা।
তাই রেফ্রিজারেটর অনেক বেশি পুরনো হয়ে গেলে তা বদলে বা এক্সচেঞ্জ করে নতুন একটি কিনে নিন। এতে বিদ্যুৎ বিলের ভার অনেকাংশেই কমে যাবে।
আমি চাচ্ছিলাম আমার পুরনো ফ্রিজটি বিক্রি করে নতুন ফ্রিজটি কিনতে। তাই অনেক জনকেই দেখিয়েছিলাম বিক্রির জন্য কিন্তু যেই দাম বলছিলো তারা সেটাতে আমি সন্তুষ্ট ছিলামনা। হটাৎ একদিন ট্রান্সকম ডিজিটালের ফেইসবুক পেজে দেখলাম ফ্রিজ এক্সচেঞ্জ চলছে সেখানে।
তাই আর দেরি না করে নক করলাম তাদের। তারপর কিনে আনলাম আমার পুরনো ফ্রিজটি এক্সচেঞ্জ করে পছন্দের ব্র্যান্ডের নতুন আরেকটি ফ্রিজ।
এক্সচেঞ্জ অফারে আমার ফ্রিজ কেনার কারণ
বর্তমানে আমাদের দেশের কিছু নামিদামী প্রতিষ্ঠান আমাদের পুরনো প্রোডাক্ট গুলো এক্সচেঞ্জ করে নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে থাকে। এদের মধ্যে রয়েছে ট্রান্সকম ডিজিটাল, বেস্ট ইলেকট্রনিক্স, পিকাবো ইত্যাদি তারা পুরনো টিভি এক্সচেঞ্জ করে দেয় নতুন টিভি, পুরনো রেফ্রিজারেটর এক্সচেঞ্জ করে দেয় নতুন ফ্রিজ, পুরনো এসি এক্সচেঞ্জ করে দেয় নতুন এসি।
আমি যে কারণে এই অফারে ফ্রিজ কিনেছিলাম তা হলো আমি এক্সচেঞ্জ ভ্যালুটা খুব ভালো পেয়েছিলাম যা অন্য কোথাও বিক্রি করলে পেতাম না। এর ফলে আমার ক্যাশ টাকা কিছুটা কম লেগেছিলো। তাছাড়া এক্সচেঞ্জ অফারের সাথে আমি আরো পেয়েছি ক্যাশব্যাক ডিসকাউন্ট, EMI ফেসিলিটি, হোম ডেলিভারি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা সেটা হলো জেনুইন প্রোডাক্ট যেটা আমি ট্রান্সকম ডিজিটাল থেকেই পেয়েছিলাম।
তো কবে এক্সচেঞ্জ করবেন আপনার পুরনো ফ্রিজটি?