সাড়ে নয় বছর আগে পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করার পর সৌরজগতের সবচেয়ে দূরবর্তী গ্রহ প্লুটোর খুব কাছ দিয়ে গ্রহটিকে অতিক্রম করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশযান নিউ হরাইজনস।
মঙ্গলবার গ্রিনিচ মান সময় ১১৪৯টায় মহাকাশযানটি বরফ ও পাথরে গঠিত গ্রহটি ও এর পাঁচটি চাঁদ পার হয়ে যায়।
এর ১৩ ঘন্টা পর গ্রিনিচ মান সময় বুধবার ০১৫২ টায় মহাকাশযানটি থেকে পাঠানো একটি বেতার সঙ্কেত স্পেনের মাদ্রিদের একটি বড় ডিশ এ্যান্টেনার মাধমে এসে পৌঁছায়। এই ডিশটি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার যোগাযোগ নেটওয়ার্কের একটি অংশ।
অনুমিত সময়েই মহাকাশযানটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে অবস্থিত জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান গবেষণাগারেও বেতার সঙ্কেত আসে।
মহাকাশযানটি প্লুটো থেকে ১২ হাজার চারশ ৭২ কিলোমিটার দূরে দিয়ে (প্রায় নিউ ইয়র্ক থেকে মুম্বাইয়ের দূরত্ব) যাওয়ার সময় মহাশূন্যে ভাসমান কণার আঘাতে নিউ হরাইজনস ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলে অনুমান করেছিলেন ব্যবস্থাপকরা। তাদের হিসাবে এর সম্ভাবনা ছিল ১০ হাজার ভাগে একভাগ।
কিন্তু সঙ্কেত পাওয়ার মাধ্যমে নিউ হরাইজনস ধ্বংস হয়নি পরিষ্কার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উল্লাসে ফেটে পড়েন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানী ও কর্মীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের উচ্ছ্বসিত প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ট্যুইটারে দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন, “এই মাত্র প্লুটো তার প্রথম পরিদর্শকের দেখা পেল। ধন্যবাদ নাসা। এটি একটি বড় ধরনের আবিষ্কারের ও আমেরিকার নেতৃত্বের দিন।”
সাড়ে নয় বছরের যাত্রায় নিউ হরাইজনস ৪৮৮ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে। প্লুটো গ্রহ সিস্টেমের মধ্য দিয়ে মহাকাশযানটি সেকেন্ডে ১৪ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রথমবারের মতো মানুষের পাঠানো যানের প্লুটো অভিযানে সংগ্রহ করা তথ্যের ৯৯ শতাংশ এখনো নিউ হরাইজনসের ভাণ্ডারেই সংরক্ষিত আছে। এই অবস্থায় মহাকাশযানটি ধ্বংস না হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধ্বংস না হলে সংগ্রহ করা তথ্যগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীতে এসে পৌঁছবে।
ওই দূরত্ব থেকে আলোর গতিতে পৃথিবীতে বেতার সঙ্কেত আসতে সাড়ে চারঘন্টা সময় প্রয়োজন হয়। তাই আগামী কয়েকদিনে অজানা সব অমূল্য তথ্য পাওয়ার জন্য নিউ হরাইজনসের বেঁচে থাকাটা জরুরি।
you can enter this link