নচযুক্ত স্মার্টফোন এখন যেন এক প্রকার ট্রেন্ড।  একটি নতুন স্মার্টফোন কিনবেন আর তাতে নচ থাকবেনা তা কি হয়? তাও যদি হয় আবার ওয়াটারড্রপ নচ কিংবা ইউ নচ! সম্প্রতি লঞ্চ হওয়া বেশ কয়েকটি স্মার্টফোনে ওয়ালটন এবার এই ট্রেন্ড আকর্ষণ ইউ নচ যুক্ত করেছে।  এটা যেমন স্মার্টফোন এর ডিজাইনকে সুন্দর করছে একইভাবে স্মার্টফোনকে সবার কাছে আকর্ষণীয় করে তুলছে।  ওয়ালটন বাজারে লঞ্চ করেছে তাদের নতুন স্মার্টফোন প্রিমো আর৬ ম্যাক্স।  এতে থাকছে এআরএম করটেক্স এ৫৫ প্রসেসর, যা একটি ১.৬ গিগাহার্জ ক্ষমতা সম্পন্ন অক্টা-কোর প্রসেসর।  এই রিভিউয়ে আমরা স্মার্টফোনটি সম্পর্কে জানব বিস্তারিত,

একনজরে প্রিমো আর৬ ম্যাক্স, 

  • এন্ড্রয়েড ৯ পাই সংস্করন
  • ১.৬ গিগাহার্জ অক্টাকোর প্রসেসর
  • ৩ জিবি র‍্যাম
  • ৩২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ/রম
  • ইউ নচসহ ১৯ঃ৯ রেসিও আইপিএস ডিসপ্লে
  • (১৩+২) মেগাপিক্সেল রিয়ার ডুয়াল ক্যামেরা মডিউল
  • ৮ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা
  • ৪০০০ এমএএইচ লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি

প্রিমো আর৬ ম্যাক্স এর বক্সে যা যা থাকছে, 

  • প্রিমো আর৬ ম্যাক্স ডিভাইসটি
  • একটি চার্জিং এডাপ্টার
  • একটি ইউএসবি কেবল
  • একটি ইয়ারফোন
  • একটি সিম ইজেকটর পিন
  • একটি প্রোটেকশন ফিল্ম/পেপার
  • একটি ট্রান্সপারেন্ট ব্যাককভার
  • ওয়ারেন্টি কার্ড ও সেফটি ইন্সট্ট্রাকশন

ডিজাইন

ডিভাইস’টির ব্যাক প্যানেল তথা রিয়ার প্যানেলে পাওয়া যাবে একটি গ্লসি প্লাস্টিক ফিনিস।  ডিভাইসটি নীল এবং কালো দুইটি রঙে পাওয়া যাবে।  রিয়ার প্যানেলে ভারটিক্যাল অ্যাঙ্গেলে বসানো ডুয়াল ক্যামেরা মডিউল এবং এলইডি ফ্ল্যাশ এর ডিজাইনে পূর্ণতা এনেছে, পাশাপাশি মাঝামাঝি স্থানে একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর তো থাকছেই।   আগেই বলেছি এর ফ্রন্ট প্যানেলে ডিসপ্লের উপরের ওয়াটার ড্রপ নচ’তো একটি আকর্ষণীয় ব্যাপার বটেই।  এর উচ্চতা ১৫৯.৮ মিলিমিটার এবং এর প্রসস্থতা ৭৬.৫ মিলিমিটার, এটি ৮.৫ মিলিমিটার পুরু।  ব্যাটারি সহ এর ওজন প্রায় ১৭২ গ্রাম।

ডিসপ্লে

প্রিমো আর৬ ম্যাক্স এর ফ্রন্ট প্যানেলে ডিসপ্লে এর অপর থাকছে একটি ইউ নচ।  এতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি ৬.২৬ ইঞ্চি এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে।  সুতরাং ডিসপ্লে এর দিক দিয়ে একে একটি বিগ ডিসপ্লে স্মার্টফোন বললে ভুল হবেনা।  ডিসপ্লেটি অন্যসকল ফোনের মতই সাইড দিয়ে ২.৫ ডি কার্ভড।  এই ডিসপ্লেটির রেজুলেসন ১৫২০*৭২০ পিক্সেল।  ডিসপ্লেটি সাইড থেকে ২.৫ ডি কার্ভড।

সিপিইউ

প্রিমো আর৬ ম্যাক্স ডিভাইসটিতে ব্যবহার করা হয়েছে এআরএম করটেক্স এ৫৫ সিপিইউ, যা একটি ১.৬ গিগাহার্জ ক্ষমতা সম্পন্ন অক্টা-কোর প্রসেসর।  সিপিইউটির সাথে থাকছে পাওয়ার ভিআর জিই৮৩২২ জিপিইউ।  এই সিপিইউ দিয়ে ৩ডি গেমিং এবং মাল্টিটাস্কিং ভালোভাবেই করা যাবে।

বেঞ্চমার্ক

মেমরি

ডিভাইসটিতে থাকছে ৩ জিবি ডিডিআর৪ র‍্যাম।  ইন্টারনাল স্টোরেজ তথা রম হিসেবে এতে থাকছে ৩২ জিবি স্টোরেজ।  ইন্টারনাল স্টোরেজ এর পাশাপাশি এই ফোনটিতে ১২৮ জিবি পর্যন্ত এসডি কার্ড ব্যবহার করারও সুবিধা থাকছে।

অপারেটিং সিস্টেম

ডিভাইসটিতে ব্যবহার করা হয়েছে হালের লেটেস্ট এন্ড্রয়েড পাই এডিশন।  এতে প্রায় এন্ড্রয়েড পাই এর স্টক স্বাদই পাওয়া যাবে।  সুতরাং ইউজার এক্সপেরিয়েন্স এর দিক দিয়েও এই ডিভাইসটি চলনসই বলতে গেলে।

রিয়ার ক্যামেরা

ডিভাইসটির রিয়ার প্যানেলে রয়েছে একটি বিএসআই ডুয়াল ক্যামেরা মডিউল।   এতে থাকছে একটি ১৩ মেগাপিক্সেল মেইন ক্যামেরা সেন্সর এবং একটি ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ সেন্সিং সেন্সর।  এর এপারচার এফ ২.০।  এখানে ব্যবহার করা হয়েছে ৫পি লেন্স।  ক্যামেরা দিয়ে এই দামে অন্যসব ফোনের চেয়ে তুলনামূলক ভালো মানের ছবি ক্যাপচার করা যাবে।

ফ্রন্ট ক্যামেরা

এর ফ্রন্ট প্যানেলে আছে একটি ৮ মেগাপিক্সেল সেলফি শুটার।  সেলফি লাভারদের জন্য এটি একটি প্লাস পয়েন্ট।

ক্যামেরা ইউআই

ফেস আনলক

স্মার্টফোনটির সিকিউরিটির ক্ষেত্রে এতে দেয়া হয়েছে ২ডি ফেস আনলক ফিচার।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট

ডিভাইসটির মেইন তথা প্রাইমারি সিকিউরিটির জন্য এতে থাকছে একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।   এতে একসাথে মোট ৫টি ফিঙ্গারপ্রিন্ট যুক্ত করা যাবে।

ব্যাটারি

ডিভাইসটিতে পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য এতে থাকছে একটি ৪০০০ এমএএইচ ক্ষমতাসম্পন্ন লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি। সুতরাং লং-রান ব্যবহার এর এর জন্যেও এই ডিভাইসটি এগিয়ে।

অনলাইন থিম স্টোর

ডিভাইসটিতে ব্যবহার এর জন্য প্রায় ১০০০ এর বেশি আগে থেকে বিল্ট ইন অনলাইন থিম পাওয়া যাবে।  যারা নিয়মিত ফোন এর ইনস্ক্রিন কাস্টোমাইজড করতে ভালবাসেন, তাদের জন্য এই থিম স্টোর একটি প্লাস পয়েন্ট।

ওয়ারেন্টি

ওয়ালটন এর অন্যসব ফোনের মতই এতে পাওয়া যাবে রিপ্লেসমেন্ট এবং ওয়ারেন্টি সুবিধা।

পরিশেষে

প্রিমো আর৬ ম্যাক্স সব দিক দিয়েই এর আগের প্রিমো আর ৫+ এর চাইতে এগিয়ে।  যদি সম্পূর্ণ পারফরমেন্স এর দিকে তাকাই, তবে দেখতে পারব যে এর এনটুটু বেঞ্চমারক স্কোর লিডিং এর দিক দিয়ে আগের চেয়ে ৪৮% এগিয়ে।