আমি আমার নিজের বানানো কফি পান করার জন্য প্রতিদিন অফিসে ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক নিয়ে আসি। প্রায় অর্ধ বছর হবে আমি ফ্লাস্কটি ব্যবহার করছি। এখন ফ্লাস্কের নীচে কিছু দাগ হয়ে গিয়েছে। যদিও খালি হওয়ার সাথে সাথেই আমি ফ্লাস্কটি ধুয়ে ফেলি।
কিভাবে ফ্লাস্কের ভিতরের দাগ এবং গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি তা নিয়ে একটু চিন্তায় ছিলাম পরে তার সঠিক উপায় খুঁজে পেয়েছি ।
চলুন দেখে নেই দাগ এবং গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়গুলো-
পদ্ধতি – A: বেকিং সোডা এবং ভিনেগারের ব্যবহার
১. বেকিং সোডা এবং ভিনেগার
প্রথমে ফ্লাস্কের নীচে বেকিং সোডা এবং ভিনেগার ঢালতে হবে। দাগযুক্ত ফ্লাস্কের মধ্যে সাদা ভিনেগার প্রায় আধা কাপ নিয়ে নিন। তারপর, এক টেবিল-চামচ বেকিং সোডা দিয়ে একত্রে ঝাঁকান। বেকিং সোডা এবং ভিনেগার ফ্লাস্কের জীবাণুগুলি ধ্বংস করে এবং দাগ দূর করে।
২. গরম পানি
বেকিং সোডা এবং ভিনেগার মিক্সচার এর পর এতে গরম পানি ঢালতে হবে। এটি ফ্লাস্কের ভিতরের শুকিয়ে যাওয়া দাগকে হ্রাস করতে সহায়তা করবে, সেইসাথে ভিনেগার এবং বেকিং সোডা পুরো ফ্লাস্কে ছড়িয়ে যাবে। ফ্লাস্কের মুখটি খুলে রাখতে হবে তা নাহলে বেকিং সোডা এবং ভিনেগার মিক্সচার এর কারণে লিক অথবা ড্যামেজ হতে পারে।
৩. ফ্লাস্কটি কয়েক মিনিটের জন্য এভাবেই রেখে দিন
8-10 মিনিটের জন্য ফ্লাস্কটি গরম পানি, বেকিং সোডা এবং ভিনেগারের সাথেই রেখে দিন। বেকিং সোডা যখন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করবে তখন দাগের অবশিষ্টাংশ গুলো উঠতে শুরু করবে। কি সহজ তাই না?
৪. বোতল ব্রাশ
আপনার স্থানীয় সুপারমার্কেটের বা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে একটি বোতল ব্রাশ কিনুন। এই ব্রাশগুলি বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য ব্যবহৃত বোতলগুলি পরিষ্কার করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা লম্বা এবং সংকীর্ণ হয়, এর ফলে ব্রাশটি ফ্লাস্কের ভেতরে স্ক্রাব করার জন্য পুরোপুরি কাজ করে। বেকিং সোডা মিশ্রণ যে দাগগুলো মুছে দিতে পারেনি এই ব্রাশের মাধ্যমে আপনি তা করতে পারবেন।
৫. ফ্লাস্কের মিশ্রণটি ঢেলে ফেলা এবং পানি দিয়ে ধোয়া
ফ্লাস্কের সম্পূর্ণ মিশ্রণটি ফেলে দিন এবং যতক্ষণ পর্যন্ত ভিনেগার বা বেকিং সোডা গন্ধ থাকে ততক্ষণ গরম পানি দিয়ে বার বার ধুয়ে নিন। ফ্লাস্কের মুখ এবং বাহিরের অংশটাও পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। সবশেষে শুকিয়ে নিন ভালোভাবে।এবার আপনার পুরোনো ফ্লাস্কটি ব্যবহার করার জন্য তৈরী হয়ে গেলো, ঠিক নতুনের মতো!
পদ্ধতি – B: আইস-সুগার পদ্ধতি ব্যবহার
১. ফ্লাস্কটিতে প্রায় এক চতুর্থাংশ বরফ দিয়ে পূর্ণ করুন। চূর্ণ বা ছোট বরফগুলো সর্বোত্তম তবে স্বাভাবিক কিউবগুলিও কাজ করবে।
২. তারপর বরফের উপর ২-৩ চিমটি লবণ ছিটিয়ে দিন। পরিষ্কার করার জন্য সমুদ্রের লবণ, সবচেয়ে বেশি কার্যকর। ফ্লাস্কে লবণ দ্রুত দিন যাতে আপনি যে বরফগুলো দিয়েছেন সেগুলো না গলে যায়।
৩. ফ্লাস্কের ঢাকনা বন্ধ করুন ভালোভাবে এবং জোরে জোরে ঝাঁকান। যতক্ষণ আপনি চান, ততক্ষণ পর্যন্ত শেক করুন, যতক্ষণ না আপনি আস্থা বোধ করেন যে বরফ এবং লবণ তাদের কাজ করেছে। এতে করে আপনার ফ্লাস্কের দাগগুলো উঠে যাবে।
৪. ফ্লাস্কের বরফ এবং লবণের মিশ্রণটি ঢেলে ফেলুন এবং গরম পানি দিয়ে বার বার ধুয়ে নিন। ফ্লাস্কের মুখ এবং বাহিরের অংশটাও পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। সবশেষে শুকিয়ে নিন ভালোভাবে।
আপনি যদি আপনার ভ্রমণে স্টেইনলেস স্টীলের ফ্লাস্ক সাথে নেন তবে “পদ্ধতি – A” একটি ভাল উপায় যা প্রতিবারই খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে পারে। আমি এই পদ্ধতি ব্যবহার করতাম কিন্তু যেহেতু আমি আইস-সুগার পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করেছি, তাই এখন এটাই সহজ মনে হচ্ছে আমার কাছে।
রান্নাঘর যেহেতু নারীদের খুব প্রিয় একটি জায়গা, সেহেতু এর প্রতিটি সরঞ্জামেরই যত্ন নেয়া উচিত যাতে করে রান্নাঘরের সৌন্দর্য না হারায়!
তাহলে কবে ধোয়ার চিন্তা করছেন আপনার পুরোনো ফ্লাস্কটি?