বাজেট এর ভেতর যদি আপনি একটি স্টাইলিস এবং সময়ের সাথে মানানসই স্মার্টফোন চান ; তবে ওয়ালটন এর নতুন প্রিমো জি৪ স্মার্টফোনটি আপনার জন্য। স্মার্টফোনটির বাজার দাম নির্ধারন করা হয়েছে ৬৯৯৯ বা বলা যায় ৭০০০ টাকা।মাত্র ৭ হাজার টাকা বাজেট এর এই স্মার্টফোনে থাকছে একটি ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর। ফলে সিকিউরিটির জন্য আপনি এখানে ব্যবহার করতে পারছেন , আপনার হাতের আঙুল।
একনজরে স্মার্টফোনটিতে যা যা থাকছেঃ
- ১.৩ গিগাহার্জ কোয়াডকোর প্রোসেসর
- ৫.৫ ইঞ্চি এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে
- ১ জিবি Ram এবং ৮ জিবি রম
- সামনে – পিছনে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা
- ২৭০০ এমএএইচ ব্যাটারি
- অ্যান্ড্রয়েড নগাট ৭.০ অপারেটিং সিস্টেম।
বড় ডিসপ্লে যাদের পছন্দ তাদের জন্য বাজেটের ভেতর দারুন স্মার্টফোন এটি। কেননা এতে থাকছে ৫.৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে। ৭ হাজার টাকায় এই স্মার্টফোনটি বাজারে সিলভার, স্যাম্পেইন গোল্ড এবং কালো কালারে পাওয়া যাবে। স্মার্টফেনটির বক্স আনবক্সিং করলে এতে যা যা পাওয়া যাচ্ছেঃ
- প্রিমো জি৮ স্মার্টফোন
- একটি মিডিয়াম কোয়ালিটি হেডফোন
- একটি ইউএসবি ক্যাবল
- একটি পাওয়ার এডাপ্টার
- ওয়ারেন্টী কার্ড ও ইউজার ম্যানুয়াল
ডিসপ্লে এবং বডি
৫.৫ ইঞ্চি এইচডি/হাই-ডেফিনেশন আইপিএস ডিসপ্লেটি চারিদিক থেকে ২.৫ ডি কার্ভড। আর এই সাইড দিয়ে হালকা কার্ভড ডিভাইসটিতে এক প্রিমিয়াম অনুভব আনে। এইচডি ডিসপ্লেটির রেজুলেশন ১২৮০*৭২০ পিক্সেল আর এটি ১৬.৭M কালার সাপোর্টেড। আর এই ডিসপ্লেতে আগে থেকে একটি স্ক্র্যাচ প্রোটেকটিভ গ্লাস লাগানো থাকছে, তার ফলে কেনার পরবর্তী সময় গ্রাহক আরেকটি প্রোকেটশন গ্লাস ব্যবহার করার মাধ্যমে ডাবল ডিসপ্লে প্রোটেকশন নিশ্চিত করতে পারবেন। এর ক্যাপাসিটিভ টাচ প্যানেল ১০ আঙ্গুল পর্যন্ত মাল্টিটাচ সাপোর্টেড।
ডিভাইসটির রিয়ার প্যানেলে ক্যামেরা এবং ফ্লাস এর নিচে থাকছে একটি ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর। আর এই ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর যেমন কাজের, তেমনি ডিভাইসটির ডিজাইনকেও বাড়িয়ে দিয়েছে দারুনভাবে। তবে স্যাম্পেইন গোল্ড কালারের চাইতে, ব্লাক এবং সিলভার কালার বেশি আকর্ষনীয় ; বিশেষ করে ব্লাক কালার। ডিভাইসটি প্লাস্টিক বিল্ড। তবে হাতে ধরে যথেষ্ঠ প্রিমিয়াম ফিল পাওয়া যাবে এবং দূর থেকে মেটাল মেটাল মনে হয়। ডিভাইসটির ব্যাকপার্ট রিমুভেবল। এই ব্যাকপার্টটি খুলে সীম এবং বাট্যারি খোলা বা লাগানো যাবে।
ডিভাইসটি দৈর্ঘ্যে ১৫৪ মিলিমিটার লম্বা, প্রস্থে ৭৭.৫ মিলিমিটার এবং পুরুত্বে ৮.৫ মিলিমিটার। আর ব্যাটারিসহ এর ওজন ১৮৪ গ্রাম। এই সম্পূর্ন ডিভাইসটিকে ব্যাকআপ দিবে একটি ২৭০০ এমএএইচ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি।
হার্ডওয়্যার
হার্ডওয়্যারের দিক দিয়ে ডিভাইসটি সাধারন। এতে MT6580 মিডিয়াটেক কোয়াডকোর সিপিইউ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি একটি ৩২ বিট সিপিইউ।সিপিইউটির কোর সংখ্যা ৪ টি এবং ক্ষমতা ১৩০০ হার্জ। ডিভাইসটিতে দেয়া হয়েছে DDR3 ১ জিবি Ram ; আর এখানে মোট ৯৫৮ এমবি এর ভেতর হালকা কিছু অ্যাপলিকেশন ইনস্টল করলে প্রায় ৪০৫ এমবি বা এর কম-বেশি Ram ফাকা থাকে।
গ্রাফিক্স প্রোসেসিং ইউনিট হিসেবে রয়েছে এআরএম এর মালি ৪০০ এমপি। ওয়ালটন এর ট্রিপিক্যাল সব বাজেট, মিডিয়াম বাজেট স্মার্টফোনে এই জিপিইউ এর দেখা পাওয়া যায়। ডিভাইসটির সার্বিক গ্রাফিক্স এবং দুই ক্যামেরা মডিউল নিয়ন্ত্রন করার জন্য এই জিপিইউ মোটামোটি। ক্যামেরা পরিচালনা করতে ল্যাগ দেখা যেতে পারে।
ডিভাইসটির রম ৮ জিবি এর ভেতর ৩.২৪ জিবি ব্যবহার করা যাবে। সেন্সর হিসেবে এতে পাওয়া যাবে – অ্যক্সেলেরোমিটার,লাইট, প্রোক্সিমিটি,ম্যাগনেটোমিটার,জাইরোস্কোপ এবং ব্যারোমিটার। গীকবেঞ্চ বেঞ্চমার্ক অ্যাপলিকেশনে এর স্কোর এসেছে, সিঙ্গেল কোর ৩৭৯ এবং মাল্টিকোর ১০৭৬। আর এনটুটু বেঞ্চমার্ক অ্যাপলিকেশনে এর স্কোর এসেছে ২২৭১৬।
ইউজার ইন্টারফেস
ডিভাইসটিতে অ্যান্ড্রয়েড এর নগাট ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখানে ইউজার ইন্টারফেসে ব্যবহারকারী পুরোপুরি স্টক এর স্বাদ পাবেন। তবে আইকনগুলো অনেকটা কাস্টমাইজড। ভিতরে কিছু ফাংশন স্টক থেকে বিপরীত এবং কাস্টমাইজড। স্মার্টফোনটির ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ এর গতিবিধি নিয়ন্ত্রন এবং স্মার্টফোনটিকে ফ্যাস্ট রাখার জন্য বিল্টইন ভাবে রয়েছে DuraSpeed ফিচার।
ক্যামেরা
ডিভাইসটির সামনে রয়েছে একটি ফ্রন্ট ফেসিং ৮ মেগাপিক্সেল BSI সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা। সাথে সামনেও থাকছে একটি এলইডি ফ্ল্যাস। রয়েছে বেশ কিছু ক্যামেরা সেটিংস। আর শুটিং মোড হিসেবে রয়েছে ; নরমাল মোড, ফেস বিউটি,এইচডিআর,স্ক্রীন মোড।
পেছনে বা রিয়ার প্যানেলে রয়েছে একইভাবে একটি ৮ মেগাপিক্সেল BSI ক্যামেরা সাথে এলইডি ফ্ল্যাস। এতে কন্টিনিউয়াস ফোকাস, টাচ ফোকাস এবং অটো ফোকাস এর মত কিছু ফিচার বেশি রয়েছে। শুটিং মোড হিসেবে রয়েছে ; নরমাল মোড, ফেস বিউটি,এইচডিআর,স্ক্রীন মোড,প্যানারোমিক মোড। আর এই ক্যামেরাটি ফুল এইচডি ভিডিও, অর্থাৎ ১০৮০*১৯২০ পিক্সেলে ভিডিও রেকর্ড করতে পারে।
স্মার্টফেনটির ক্যামেরা/ইমেজ সেন্সর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হল চায়নার গ্যালাক্সিকোর ইনকর্পোরেশন।
ক্যামেরা স্যাম্পল
ভালো ও খারাপ দিক
ডিভাইসটিতে ১০ মাল্টিফিংগার টাচ সুবিধা দেওয়া হয়েছে এটি একটি প্লাস পয়েন্ট। ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর দেওয়া হয়েছে যা রেসপন্স টাইম ০.২ সেকেন্ড। সামনে পেছনে দেওয়া ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। সেলফি লাভারদের জন্য এই ক্যামেরা অনেক ভালো হবে।
বাজেট লেভেলে এসব স্মার্টফোন থেকে অনেক বেশি কিছু আসা করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। তবে এতে ৪জি কানেক্টিভিটি দেওয়া থাকলে ভালো হত।