ওয়ালটন এর এইচ সিরিজের স্মার্টফোন যারা ব্যবহার করেছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন যে ; এই সিরিজের স্মার্টফোন তুলনামূলক ভাবে ডিজাইন এর দিক দিয়ে আকর্ষনীয় হয়। এইচ সিরিজের আরেকটি লক্ষ্যনীয় বিষয় স্মার্টফোন গুলো যথেষ্ঠ বাজেট ফ্রেন্ডলি হয়। আজ আলোচনা করব এইচ সিরিজের নতুন সদস্য ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৭ নিয়ে। স্মার্টফোনটি পুরোপুরি বেজেললেস না হলেও এর ডিজাইনে বেজেললেস কনসেপ্টটি ফুঁটে উঠেছে। স্মার্টফোনটির আরেকটি ফিচার টেকনোলোজি হল এর ১৮:৯ রেশিও ডিসপ্লে। স্মার্টফোনটি ডিজাইন এর দিক দিয়ে অনেক আকর্ষনীয়। যারা বাজেট রেঞ্জে প্রিমিয়াম ডিজাইনের স্মার্টফোন চাচ্ছেন তাদের জন্য প্রিমো এইচ ৭ ডিভাইসটি।
আনবক্সিং
একনজরে প্রিমো এইচ ৭ ডিভাইসটিতে যা থাকছেঃ
- ৫.৫” ১৮:৯ রেশিও ডিসপ্লে; যা সাইড দিয়ে ২.৫ডি কার্ভড
- ফ্রন্ট ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সাথে এলইডি ফ্ল্যাশ
- রিয়ার ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সাথে এলইডি ফ্ল্যাশ
- ১ জিবি ডিডিআর৩ রাম এবং ৮ জিবি রম
- ২৮৫০ এমএএইচ লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি
ডিসপ্লে এবং বডি
ডিভাইসটিতে রয়েছে ৫.৫ ইঞ্চি এর এইচডি আইপিএস প্যানেল। আর আকর্ষনীয় বিষয় হল এটি একটি ১৮:৯ রেশিও এর ফুল ভিউ ডিসপ্লে। গেমিং,মুভি ওয়াচিং এর ক্ষেত্রে থাকছে প্লাস পয়েন্ট। এটি এইচডি তথা হাই ডেফিনেশন ডিসপ্লে যার রেজুলেশন ১২৮০*৬৪০ পিক্সেল। ডিভাইসটি ৫ ফিংগার মাল্টিটাচ সাপোর্টেড। আইপিএস ডিসপ্লে হওয়ার কারনে নি:সন্দেহে ভিউইং অ্যাঙ্গেল নিয়ে কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। ডিসপ্লেটি সাইড দিয়ে ২.৫ ডি কার্ভড হওয়ার কারনে স্মার্টফোনের ডিজাইনকে এটি বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণে।
ডিসপ্লে ২.৫ ডি কার্ভড এবং ব্যাক পার্ট বাকানো হওয়ার কারনে ; স্মার্টফোনটি হাতে নিলে সাইড দিয়ে সুন্দর একটি রাউন্ড কাট অনুভব করা যাবে। রিয়ার প্যানেলে ক্যামেরা এবং ফিংগার প্রিন্ট সেন্সর মডিউল দেখতে খুবই সুন্দর এবং আকর্ষনীয়। ডিভাইসটির আপার প্যানেলে রয়েছে ৩.৫ এমএম হেডফোন জ্যাক, ২.০ ইউএসবি পোর্ট এবং হেডফোন জ্যাক। বাম সাইডে রয়েছে ভলিউম এবং পাওয়ার বাটন।
ডিভাইসটি লম্বায় ১৫১ মিলিমিটার, প্রস্থে ৭১ মিলিমিটার। ডিভাইসটির পুরুত্ব ৮.৫ মিলিমিটার। ব্যাটারিসহ এই প্রিমো আরএইচ৩ ডিভাইসটির ওজন ১৪৬ গ্রাম। ডিভাইসটিকে ব্যাক আপ দিবে একটি ২৬০০ এমএএইচ লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি,ব্যাটারিটি নন-রিমুভেবল। আর ডিভাইসটির ব্যাকপার্টও নন রিমুভেবল। স্মার্টফোনটির ফ্রন্ট প্যানেলে নিচের দিকে পাওয়া যাবে একটি ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর। যা এর ডিজাইনকে শাওমির ট্রিপিক্যাল ডিজাইন এর মত করে তুলেছে।
ইউজার ইন্টারফেস
ডিভাইসটিতে অ্যান্ড্রয়েড এর নগাট ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখানে ইউজার ইন্টারফেসে ব্যবহারকারী পুরোপুরি স্টক এর স্বাদ পাবেন। তবে আইকনগুলো অনেকটা কাস্টমাইজড। ভিতরে কিছু ফাংশন স্টক থেকে বিপরীত এবং কাস্টমাইজড।
ক্যামেরা
ডিভাইসটির পিছনে/রিয়ার প্যানেলে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেল BSI সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা । এই ক্যামেরায় সিঙ্গেল এলইডি ফ্ল্যাস এবং অটোফোকাস এর মত সুবিধা থাকছে। রিয়ার ক্যামেরার শুটিং মোড গুলো হলঃ প্যানারোমা, এইচডিআর,ফেস বিউটি এবং নরমাল মোড। ফ্রন্ট ক্যামেরার শুটিং মোড গুলো হলঃ এইচডিআর,ফেস বিউটি এবং নরমাল মোড। ক্যামেরার সেটিংস অপশনগুলো হল: এক্সপোসার কন্ট্রোল,হোয়াইট ব্যালেন্স, আইএসও ব্যালেন্স,ইমেজ প্রোপার্টিজ,কালার ইফেক্ট। ক্যামেরাটি ১২৮০*৭২০ পিক্সেল রেজুলেশনে ভিডিও রেকর্ড করতে পারে।
ডিভাইসটির সামনে রয়েছে একটি ফ্রন্ট ফেসিং ৫ মেগাপিক্সেল BSI সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা। সামনেও থাকছে একটি সফট এলইডি ফ্ল্যাশ। রয়েছে বেশ কিছু ক্যামেরা সেটিংস। আর শুটিং মোড হিসেবে রয়েছে ; নরমাল মোড, ফেস বিউটি,এইচডিআর,স্ক্রীন মোড।
ক্যামেরা স্যাম্পল
হার্ডওয়্যার
ডিভাইসটিতে রয়েছে মিডিয়াটেকের MT6580 চিপসেট। এটি একটি চার কোর বিশিষ্ঠ কোয়াডকোর সিপিইউ। যার প্রতি কোরের ক্ষমতা ১৩০০ হার্জ। গ্রাফিক্স প্রোসেসিং ইউনিট হিসেবে এতে রয়েছে মালি-৪০০ এমপি জিপিইউ। ওয়ালটনের এই বাজেটের অন্যসব ডিভাইসে সাধারন এই হার্ডওয়্যারই দেখা যায়।
Ram ও রম
ডিভাইসটির সিস্টেমকে ব্যাকআপ দিবে একটি ১ জিবি Ram। এটি একটি LP DDR3 Ram। যার ৯৫৭ এমবি এর ভেতর সাধারনত কিছু অ্যাপলিকেশন ইনস্টল করলে ৪২৫ এমবির মতন Ram বা প্রায় ৫৩% ফাঁকা থাকে। ইন্টারনাল মেমোরী ৮ জিবি এর ভেতর ৪.২১ জিবি ব্যবহারযোগ্য ।
বেঞ্চমার্ক
গীগবেঞ্চ অ্যাপে সিঙ্গেল কোরে ডিভাইসটির স্কোর এসেছে ৪০৫। আর মাল্টি কোরে এর স্কোর এসেছে ১১০৪। স্পেসিফিকেশন হিসেবে বেঞ্চমার্ক স্কোর এভারেজ।