আপনি তারযুক্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যাবহার করেন,মধ্যরাতে হঠাৎ একটি প্রয়োজনীয় ফাইল ডাউনলোড করতে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। সংযোগ পেতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে সকাল অথবা তারও বেশি সময়। এরকম সমস্যার মুখোমুখি আমরা হরহমেশাই হই। বিশেষ করে রাত্রে ঝড় হলে তো কথাই নেই। কিন্তু দিন বদলেছে বদলেছে প্রযুক্তিও। প্রযুক্তির সাথে সাথে বদলেগেছে আমাদেরও জীবনযাত্রা। ইন্টারনেট ব্যাবহারের নতুন প্রযুক্তি এসেছে ওয়াইম্যাক্স,যা ইন্টারনেট ব্যাবহারকে করে তুলেছে আরও সহজতর। এবারে থাকছে ওয়াইম্যাক্স নিয়ে বিস্তারিত।
ওয়াইম্যাক্স এর পরিচিতি
ওয়াইম্যাক্স হচ্ছে ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টারঅপারেবিলিটি ফর মাইক্রোওয়েব এক্সেসের’ সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি একটি বিশেষ পদ্ধতির তারহীন টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট থেকে শুরু করে পূর্ণাঙ্গ মোবাইল অথবা এ ধরনের তথ্য গ্রহনকারি ও প্রদানকারি তারহীন যন্ত্রে তথ্য গ্রহন ও প্রদান করা যায়। ২০০১ সালের জুনে IEEE 802.16 স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী প্রযুক্তিটির বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত ওয়াইমইয়াক্স ফোরাম ওয়াইম্যাক্স নামটি দিয়েছে। ওয়াইম্যাক্স হচ্ছে তার এর বিকল্প যার মাধ্যমে 70 Mb/s গতিতে এবং সর্বোচ্চ 1Mb/s গতিতে তথ্য গ্রহন করা যায়। এর বেজ স্টেশন ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত তথ্য গ্রহন ও প্রদান করতে সক্ষম।
ওয়াইম্যাক্স কেন প্রয়োজন
শুরুতেই বর্তমান ইন্টারনেট ব্যাবস্থার একটি অসুবিধার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত ইন্টারনেট কানেকশনের বিকল্পগুলোর অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশে এখনো 4G নেটওয়ার্কের ব্যাবহার প্রতুল নয়। ওয়াইম্যাক্সেই শুধু এর সেবা দিতে সক্ষম। ডায়াল আপ এক্সেস-এ সাধারণত স্পীড স্লো হয়ে থাকে।পিক আওয়ারে অনলাইনে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে।মডেম বা ডিএসএল এর মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড এক্সেস সার্ভিস দেয়া হয় বলে এই পদ্ধতিতে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড এক্সেস পেতে খরচ বেশি হয়।টেলিফোনের ল্যান্ডলাইন ছাড়া এধরণের সংযোগ সম্ভব নয়।এছাড়া মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক অর্থাৎ জিএসএম প্রযুক্তি তৈরী হয়েছিলো টেলিফোনের জন্য। পরে কিছু নতুন টেকনিক্যাল অপশন যুক্ত করার মাধ্যমে ইন্টারনেট সার্ভিসের সুবিধা প্রদান করা হয়।ভবিষ্যতের নেট ব্যবহারের মাত্রা যে হারে বাড়ছে, তাতে এই কম্পাটিবল অপশন দিয়ে কাজ চলবে না একথা নিশ্চিত।ব্যান্ডউইথের সীমাবদ্ধতা ছাড়াও অন্যান্য টেকনিক্যাল কারণে জিএসএম পদ্ধতিতেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ সম্ভব নয়।চেষ্টা করলে মিডিয়াম স্পীডের সংযোগ দেয়া যায়।কিন্তু তাতে খরচ অত্যন্ত বেশি।ওয়াইফাই হচ্ছে একটি সীমিত এলাকায় ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক জোন তৈরী করে ওয়াইফাই রাউটারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রাহককে নেট সুবিধা প্রদান করার একটি ব্যবস্থা।নানা ধরণের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে সমাজের উচ্চ শ্রেণী থেকে নিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিকট সহজে এবং কম খরচে ইন্টারনেটকে সহজলভ্য করার লক্ষে যাত্রা করা উচ্চগতির বিশেষ ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক হচ্ছে এই ওয়াইম্যাক্স।
নেটওয়ার্কের গঠন
ওয়াইম্যাক্স বেজ স্টেশন
যেভাবে ওয়াইম্যাক্স নেটওয়ার্ক কাজ করে-
যেভাবে তথ্য প্রেরণ করা হয়-
বিভিন্ন প্রকার ওয়াইম্যাক্স নেটওয়ার্ক
প্রাথমিকভাবে দুই ধরনের-
নন লাইন অফ সাইট
এ ধরনের নেটওয়ার্কে বিশেষ প্রকিয়ায় নিম্নতর তরঙ্গকে উচ্চতর তরঙ্গে পরিণিত করে বেজ স্টেশনের রিসিভারে পৌঁছে দেওয়া যায়। এর ফ্রিকোয়েন্সি 2GH থেকে 22GH এ উন্নীত করা যায়।
নন লাইন অফ সাইট এর একটি চিত্র
লাইন অফ সাইট
এ ধরনের নেটওয়ার্কে উচ্চতর ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গ ব্যাবহার করে তথ্য বেশি পরিমানে আদান প্রদান করা যায়।
লাইন অফ সাইট এর চিত্র
ওয়াম্যাক্স নেটওয়ার্ককে আরো দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স
ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স আইইইই 802.16D স্টান্ডার্ড এর একটি প্রযুক্তি।এ ক্ষেত্রে গ্রাহক প্রান্তে একটি রিসিভার টাওয়ার(এন্টেনা)বসানো হয়।১০গিগা হা. থেকে শুরু করে ৬৬গিগা হা. পর্যন্ত হাই ফ্রিকেয়েন্সি রেঞ্জ পাওয়া যায়। ফিক্সড ওয়াইম্যাক্সের রেঞ্জ এবং ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি বেশি হলেও মোবিলিটি নেই বলে এই পদ্ধতি সাধারণ ব্যবহারকারীদের নিকট জনপ্রিয়তা পায়নি।
মোবাইল ওয়াইম্যাক্স
মোবাইল ওয়াইম্যাক্স আইইইই ৮০২.১৬ই স্টান্ডার্ড এর একটি প্রযুক্তি এবং পরিচালিত হয়।এক্ষেত্রে গ্রাহক প্রান্তে তারবিহীন এজ মডেমের মতো একটি ওয়াইম্যাক্স মডেম ব্যবহারের প্রয়োজন হয়।২গিগা হা. থেকে শুরু করে ১১গিগা হা. পর্যন্ত লো ফ্রিকেয়েন্সি রেঞ্জে ট্রান্সমিশন হয় বলে ঘিঞ্জি এলাকার গলির প্যাচ অথবা সূর্যের আলোহীন অন্ধকার কোন বাসায় ওয়াইম্যাক্স সিগন্যাল অনায়াসে ওয়াইম্যাক্স মডেম দিয়ে রিসিভ করা সম্ভব হয়।ফিক্সড ওয়াইম্যাক্সের তুলনায় মোবাইল ওয়াইম্যাক্সের ইনডোর ইউনিট অর্থাৎ মডেমের ক্ষেত্রে ব্যাবহারকারীকে ওয়াইম্যাক্স বেজ ষ্টেশনের কাছাকাছি থাকতে হয়।নাহলে রেডিও সিগন্যাল নিম্নতর হয়ে থাকে।
ওয়াইম্যাক্স এর দুই ধরনের সেবা-
মাল্টিমিডিয়া ওয়াইম্যাক্স সার্ভিস
ওয়াইম্যাক্স এ প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সেবা যুক্ত হচ্ছে। ওয়াইম্যাক্স এ OFDM এবং SOFDM প্রটকল ব্যাবহৃত হয় বলে এর দারা ইন্টারনেট এর মাধ্যমে ভয়েস কল,ভিডিও কনফারেন্স,MMS এবং লিখিত তথ্য পাঠানো যায়।
ওয়াইম্যাক্স ব্রডব্যান্ড সার্ভিস
ওয়াইম্যাক্স এর পরিসেবা মাইল এর পর মাইল বিস্তৃত। এটি মেট্রোপলিটন নেটওয়ার্কেরও একটি অংশ। এর দারা বিভিন্ন ব্রডব্যান্ড সেবা যেমন টেলিফোন,ইন্টারনেট ব্যাবহার,কল এবং সেলুলার সার্ভিস পাওয়া যায়। ওয়াইম্যাক্স দুই ধরনের নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি সম্পাদন করতে পারে,10 GHz থেকে 66 GHz এবং 2 GHz থেকে 11 GHz পর্যন্ত। এছাড়া ওয়াইম্যাক্স IPv4, ATM, Ethernet, LAN এবং Ipv6 সেবা দিয়ে থাকে। 802.11 ওয়ারলেস LAN এর বিকল্প হিসেবেও ওয়াইম্যাক্স ব্যাবহৃত হয়।
ওয়াইম্যাক্স এর মাধ্যমে কম খরচে বেশি ফ্রিকোয়েন্সি পাওয়া যায়। প্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে আমাদের দেশের প্রতিটি গ্রাম থেকে শুরু করে প্রত্যেক জনপদ বিকশিত হওক প্রযুক্তির আলোয়। ওয়াইম্যাক্স হয়ে উঠুক আগামী প্রজন্মের প্রযুক্তির বাহক।
thanks vai for share us তবে আমরা 3g পাই নাই কবে যে পাব তাও জানি না ।
🙁 😀
vai nega to chaloy na ato kisu buzla ki kora…
vai nega to chaloy na ato kisu buzla ki kora…