33

12189718_714304538700283_6563052323859699827_n 444 555

Events link

 

“ক্লাস থেকে তুমি বের হবা নাকি আমি?”
ঠিক এভাবেই বহুদিন ধরে ফোর্স করে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত একটি বেসরকারি ভার্সিটির(IUBAT) শিক্ষার্থীদের। তাদের অপরাধ হচ্ছে তারা পাঞ্জাবি, পাজামা, পাগড়ি, হিজাব এবং নিকাব পরে ভার্সিটিতে আসছে! এই নিউজটি যখন আমাদের জানানো হয় আমরা নিশ্চিত হবার জন্য সেখানে সরাসরি যাই এবং শিক্ষার্থী ভাইয়া ও আপুদের সাথে সরাসরি কথা বলি। আজ এবং আগামী দিনও তারা মানববন্ধন করে এবং করবে। তাদের সাথে ভার্সিটির গেইটে ভিসি র আদেশে গার্ডরা যখন একজন আসামীর মত এবং যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে তাদের ভেতরে ঢুকতেই বাধা দেয় তখন বেশ অবাক হতে হয়। আমরা সেই দ্বীনি ভাইয়া ও আপুদের সাথে কথা বলি। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রপতির নির্দেশ এবং সংবিধানের (৪১ নম্বর অনুচ্ছেদ) আইন উপেক্ষা করেই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ভাবে এই শিক্ষার্থী ভাইয়া আপুদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে আসছে। সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের আইনের বাইরে গিয়ে সেই ভার্সিটি পান্জাবি , হিজাব পরা কোন ছেলেমেয়েকেই ভর্তি নেয় না। এমনকি রানিং সেমিষ্টারে একজন দ্বীনি ভাইকে চার বিষয়ে ফেইল দেয়া হয় শুধুমাত্র পান্জাবি পড়বার কারণে এবং তাকে সেটা জানানোও হয়, শুধু তাই না তাদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে বিপর্যস্ত আর অপমান করা হয় অন্যান্য স্টুন্ডেন্টদের সামনে। কয়েকজন আপু জানান তাদের জোরপূর্বক হিজাব না পড়ে শর্ট হিজাব পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে এমনকি অনেককে মুখের নিকাব বাধ্যতামূলক খুলে ক্লাস করতে বলা হচ্ছে। একজন দ্বীনি আপু জানান তিনি অনেক কষ্ট করে তার ফ্যামিলিতে দ্বীন পালন করে আসছেন এবং আলহামদুলিল্লাহ্ তার ফ্যামিলিকে রাজি করিয়েছেন কিন্তু এখন ভারসিটিতে এসে তাকে জোর পূর্বক শর্ট হিজাব এবং নেকাব খুলে ক্লাস করতে হচ্ছে।পরীক্ষায় ফেল করানোর কারণে ফ্যামিলি থেকেও দ্বীন পালনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক চাপ দিচ্ছেন মা বাবারা। ফলে তারা পুরোপুরি একা হয়ে যাচ্ছেন! একজন দ্বীনি ভাইয়া জানান তাদের অনেককেই পরীক্ষা দিতে দেয়া হয় না এবং এখনো দেয়া হচ্ছে না। ভার্সিটিতে সব ধরনের ড্রেস অ্যালাউড হলেও পান্জাবি,নিকাব হিজাব কখনোই এলাউ করা হচ্ছে না! ভার্সিটির বেশিরভাগ স্টুন্ডেন্টরা এই মনগড়া এবং অবৈধ বিধিনিষেধের বিপক্ষে, কিন্তু ভার্সিটির অধ্যক্ষের নির্দেশে এবং চাপে তারা এই দ্বীনি ভাইবোনের পক্ষে কোন ধরনের কথা বলতে পারছেন না…
দ্বীনি ভাইয়া আপুদের ক্লাসমেইটরা অর্থাত যারা পান্জাবি/হিজাব পড়েন না তারা বলেন কিছু স্যার ম্যাডামরা অনেক অপ্রীতিকর কথা, অপমান, পরীক্ষায় ফেইল করিয়ে দেবার পরেও সেই দ্বীনি ভাইয়া এবং আপুরা কখনোই কোন বিশৃঙ্খলা বা কোন ধরনের প্রতিবাদ করে না বরং এভাবেই নিজেদের ক্ষতি করে চুপ করে এসব মেনে নিচ্ছে অনেকদিন ধরে। তাই দ্বীনি ভাইয়া ও আপুদের সাথে তারাও আকুলভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে এই অবৈধ ও মনগড়া নিয়ম সরিয়ে নেয়া হয় এবং সবাই তাদের পাশে দাঁড়ান…
নিচে কমেন্টে মহামান্য রাষ্ট্রপতির দেয়া চিঠিটির স্ক্যান কপি(ছবি) দেয়া হয়েছে। যা ২০১২ থেকে IUBAT অমান্য করে আসছে।
এবার আমাদের নিজস্ব কিছু কথা বলি –
বাংলাদেশের প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কখনোই বাংলাদেশের সংবিধান অথবা ইউজিসির আইনের বাইরে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম চাপিয়ে দ্বীনি ভাইবোনদের পোশাকের ব্যাপারে হেনস্তা করে নি। অথচ সেখানে তারা দীর্ঘদিন ধরে এই অসহায় দ্বীনি ভাইয়া আপুদের শুধুমাত্র পোশাকের কারণে মানসিক টর্চার করে আসছে। তাই আমাদের বিনীত অনুরোধ প্রশাসনসহ যারা তাদের পাশে আইনি সহায়তা নিয়ে দাঁড়াতে পারবেন তারা আশা করছি এগিয়ে আসবেন, জানিয়ে রাখি আজ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার সাংবাদিক তাদের সাথে কথা বলেন এবং আগামীকালও তাদের মানববন্ধনে তারা রিপোর্টিংয়ে আসবেন এছাড়াও স্টুডেন্টরা আগামীকাল প্রেসক্লাবেও মানববন্ধন করবেন আর যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইয়া এবং আপুরা তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে চান তারা অবশ্যই আপনার ফ্যামিলির অথবা পরিচিতদের সাথে পোষ্টটি শেয়ার করুন এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের পাশে দাঁড়ান। আর যে যেপ্রান্ত থেকেই পোষ্টটি পড়ছেন সবাই আল্লাহর কাছে খুব বেশি বেশি দুআ করুন যাতে আল্লাহ্ সুবহানুতাআলা ভার্সিটি অথোরিটিকে এ ধরনের অবৈধ ও মনগড়া নিয়ম বাদ দিতে বাধ্য করেন এবং আমাদের ভাইবোনগুলোকে মানসিকভাবে আরো শক্ত থাকবার তৌফিক দেন।

ইসলামে পুরুষের পোশাক
একজন পুরুষের সদর তথা নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরয আর ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করা সুন্নাত*।
*আমি বিষয়টি কোথাও খুজিনি বা পড়তে গিয়ে পাইনি। তবে সকল মাওলানাই এতে একমত, তাই বিষয়টি সত্য বলেই ধরে নেওয়া যায়।

ইসলামে নারীর পোশাক
পুরুষের ব্যাপারে তেমন কিছু না থাকলেও ইসলামে নারীর মুখমন্ডল ও হাতের কব্জি ছাড়া সকল অঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। শুধু ঢেকে রাখাই নয় সাথে এমন পোশাক পরিধানে আদেশ দেয়া আছে যেন দেহের ভাজ বোঝা না যায়।

এখন আসি অন্য প্রসঙ্গে। নারীর পোশাকের নিয়ম দেখে অনেকেই হয়তো আমার মাঝেও আল্লামা শফির ছায়া লক্ষ করতে পারেন। নারীরা কি পড়ছে, তাতে সমাজের কতোটা অবক্ষয় হচ্ছে তার চেয়ে বেশী দরকার নিজের কতোটা অবক্ষয় সাধন করেছি সেটা জানা। আমরা সবাই জানি নিজের পাপ-পুন্যের হিসাব নিজেকে দিতে হবে, এতে কারও দ্বিমত থাকার কথা নয়।
যারা পান্জাবি পড়ে ঢুকতে না দেওয়ায় মানব বন্ধন করছেন, দাবী এনেছেন “ধর্মীয় পোশাক পরিধানে বাধা দেবার” তাদের জন্য বলব, পান্জাবি না পড়লে কোন ক্ষতি সাধন হবে না। পান্জাবি না পড়ে ঢোলা শার্ট বা টি-শার্ট পড়তে পারেন, এতে ইসলামী কোন বাধা নেই, যদি না তাতে কোন জীবের ছবি থাকে। আর পায়জামার বিষয়ে বলব, দেশে জিন্স আসার খুব বেশী দিন হয়নি। বর্তমানে সবাই জাকির নায়েক কে ইসলামী মানুষ হিসাবে জানে, প্রয়োজনে তার পোশাক বিষয়ক লেকচার গুলো পড়ে দেখতে পারেন। মানুষ এখনও অফিসে বাননো পেন্ট পড়ে, আপনারও পড়ুন। টাকনু না ঢেকে ঢোলা পেন্ট বানানো কোন বিষয়ই না। তবে প্যান্ট-শার্ট পড়ে ক্যাম্পাসে আসতে সমস্যা কোথায়!

এবার আসছি, লং বোরখার জায়গায় শর্ট বোরখা নিয়ে। ইসলামী আইন বা রাষ্টীয় আইন কখনোই ফেরেশতাদের জন্য বানানো হয়নি। খুব বেশী দরকার হবে না, নিজের মনকে প্রশ্ন করলেই জানা যাবে কতোজন সঠিক পর্দা করছি, এমনকি নিজের বাসায় কে কে পর্দা করছে।
তাই দাবী হতে পারে, নারীদের লং বোরখা কোন ভাবেই বাদ দেয়া যাবে না। আমি যতোদুর মনে করতে পারি, গত বছরে ব্রাক/আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদয়লয়ে এই নিয়ে একটি ঘটনা ঘটেছিল, যা নিয়ে ফেসবুকে অনেক তোলপাড়ও হয়েছিল। কিন্তু মূল ঘটনায় ছিল, মেয়েটি মুখও ফহেকে রেখেছিল, তাতে তার পরিচয় বোঝাই সম্ভব ছিল না। তাই কতৃপক্ষ বলেছিল অন্তত টুকু না ঢাকার জন্য, যাতে পরিচয় বোঝা যায়।

আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি ধর্মীয় বিষয়কে সর্বদা টেনে না আনাই ভালো। আমি নিজে এই আন্দোলনকারীদের চেয়ে ইসলাম কে কম জানি, তবে কাল যদি হিন্দু ধর্মাম্বলীরা তাদের ধর্মীয় পোশাকে আসতে চায় তবে তাদের কতৃপক্ষ কিভাবে বাধা দিবে।

44 55 66