বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম
৬ নাম্বর
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন? আশা আপনারা সকলে অনেক ভাল আছে, আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভাল আছি, যারা ইতি মধ্যে তাবলিগে গেছেন তারা এই ৬ নাম্বারের সাথে অনেক পরিচিত আছেন, আর যারা যাননি, তাদেরকে বলছি, তাবলিগে গেলে এই জিনিসটির উপরে ভাল ধারনা থাকা দরকার, যদিও আপনি নতুন যানন, তাহলে যাদের সাথে যাবেন তারা এই বিষয়টি নিয়ে আপনার সাথে আলোচনা করবে এবং আপনাকে এই বিষয় গুলো ভাল করে বুঝানোর চেষ্টা করবে, বাকিটা আপনার ইচ্ছা এবং আল্লাহ্ এর নেয়ামতে যদি আপনি জ্ঞান অর্জন করতে পারেন তাহলেতো ভাল।
আল্লাহ তায়ালা যদি কোন বান্দাকে কুবল করতে চান তা হলে তার মাল বা যোগ্যতাকে দেখেন না, দেখেন তার সিফাতকে। সিফাতের মধ্যে বড় সিফাত হল ঈমানের সিফাত। ঈমানের কালিমা হল লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ অর্থ্যাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদনাই, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহতায়ালার রাসুল।
কালেমার মাকসাদঃ হুজুর (সঃ) এর প্রতি আস্থা থাকার কারনে হুজুর (সঃ) যত খবর নিয়ে দুনিয়াতে এসেছেন সে খবর গুলোকে নির্দ্বিধায় মেনে নেওয়া, যেমনঃ মিরাজের ঘটনা। কালেমার মেহেনতের দ্বারা তিন জিনিসকে ছহী করা।
(১) দিলের এক্কীনকে ছহী করা (২) তরীকার এক্কীনকে ছহী করা (৩) জযবার এক্কীনকে ছহী করা।
íদিলের এক্কীনকে ছহী করাঃ অর্থ্যাৎ দুনিয়ার কোন চিজ বা আজবারের থেকে কিছু হয়না। যা কিছু হয় আল্লাহ তায়ালার থেকে, এ কথার এক্কীনকে দেলের মধ্যে বসানো।
íতরীকার এক্কীনকে ছহী করাঃ হুজুর (সঃ) এর তরীকার মধ্যে দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি ও কামিয়াবি এবং অন্যান্য সমস্ত গায়ের তরীকার মধ্যে না কামীয়াবীর এক্কীন দেলের মধ্যে বসানো।
íজযবার এক্কীনকে ছহী করাঃ দুনিয়ার সুখ ও দুঃখ আসল নয়। আখেরাতের সুখ ও দুঃখ আসল, এ কথার এক্কীনকে দীলের মধ্যে বসানো।
ঈমানের লাভঃ যে ব্যক্তি যাররা পরিমান ঈমান নিয়ে মৃত্যু বরন করবে আল্লাহতায়ালা তাকে কমপক্ষে দশ দুনিয়ার সমান জান্নাত দান করবেন এবং যে পর্যন্ত একজন কালেমা পড়নেওয়ালা লোক দুনিয়াতে জিন্দা থাকবে ততদিন পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।
íঈমান হাসিল করা তরীকাঃ কালেমার হাকিক্কত হাসিল করার জন্য ৩ লাইনে মেহেনত করতে হবে।
(ক) দাওয়াত, (খ) মশ্ক, (গ) দোয়া।
(ক) দাওয়াতঃ দাওয়াত আমরা কোথায় দিব? দুনিয়ার যে সব জায়গায় যারা বলছে আমাদের দ্বারা হয় সে সব জায়গায় গিয়ে আল্লাহ্র তরফ থেকে হওয়ার দাওয়াত দিতে হবে।
(খ)মশ্কঃ ঘরে অথবা মসজিদে যে কোন সময় মজমা বানিয়ে চার লাইনে মশ্ক করতে হবে।
í আল্লাহ্ তায়ালার কুদরতের আলোচনা,
íনবীগন আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করার কারণে যে সব নসরত পেয়েছেন তার আলোচনা করা,
í সাহাবীগন আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করার কারণে যে সব নসরত পেয়েছেন তার আলোচনা করা।
í কোরআন হাদিসের আলোকে নিজের ঈমানের পর্যবেক্ষণ করা।
(গ) দোয়াঃ কামেল ঈমানের দরজায় পৌছার জন্য সর্বদা আল্লাহ্ তায়ালার কাছে দোয়া করতে থাকা।
(২) নামাজের মাকসাদঃ আমলের দ্বারা আল্লাহ তায়ালার খাজানা থেকে সরাসরি নেওয়ার এক্কীন দীলে পয়দা করা। আর আমলের মধ্যে সবচেয়ে বড় আমল হল নামাজ।
í নামাজের লাভঃ যে ব্যক্তি সময় ও গুরুত্ব সহকারে নামাজ সমূহকে আদায় করবে আল্লাহ তায়ালা তাহাকে নিজ জিম্মায় জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
í নামাজ হাসিল করার তরীকা সমূহঃ নামাজ হাসিল করার জন্য ৩ লাইনে মেহেনত করতে হবেঃ
(ক) দাওয়াত (খ) মশ্ক (গ) দোয়া।
(ক) দাওয়াতঃ উম্মতের মাঝে চলতে ফিরতে নামাজের উদ্দেশ্য ফাজায়েলকে সামনে রেখে দাওয়াত দিতে হবে। যে পরিমান দাওয়াত মানুষকে দিব সেই পরিমান নামাজের হাকিক্কত আমার জিন্দেগীতে আসবে।
(খ) মশ্কঃ জান্নাতের চাবি নামাজ আর নামাজের চাবি অজু। তাই অজু থেকে শুরু করে নামাজের ফরজ, ওয়াজিব এবং নামাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনাবলী উল্লেখ করে নামাজের মশ্ক করা।
(গ) দোয়াঃ যেভাবে নামাজ পড়লে আল্লাহ রাজী খুসী হন সে ভাবে নামাজের জন্য দোয়া করতে থাকা।
(৩) এলেমের মাকসাদঃ এলমে এলাহীর মধ্যে কামিয়াবীর এক্কীন দীলে পয়দা করা।
í এলেমের লাভঃ যে ব্যক্তি এলম অর্জন করার জন্য কোন রাস্তা অবলম্বন করবে আল্লাহতায়ালা তার জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দিবেন।
এলেম হাসিল/করার তরীকাঃ এলেমের হাকিক্কত হাসিল করার জন্য ৩ লাইন মেহেনত করতে হবেঃ
(ক) দাওয়াত, (খ) মশ্ক, (গ) দোয়া।
(ক) দাওয়াতঃ উম্মতের মাঝে চলতে ফিরতে এলেমের উদ্দেশ্য ও ফাজায়েলকে সামনে রেখে দাওয়াত দিতে হবে।
(খ) মশ্কঃ এলেমের হাকিক্কত দিলে পয়দা করার জন্য ৪ লাইনে মশ্ক মেহেনত করতে হবে।
(১) ফাজায়েল এলেম তালিমের হালকায় বসে, (২) মাসায়েল এলেম হক্কানী আলেমের কাছ থেকে জানা, (৩) সিফাতের এলেম মুন্তাখাব হাদিস পড়ে, (৪) তরবীয়তের এলেম হায়াতুস সাহাবা পড়ে।
(গ) দোয়াঃ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যে পরিমান এলেম অর্জন করা ফরজ সে পরিমান এলেম নিজের জিন্দেগীতে আসার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতে থাকা।
(৩) জিকিরের উদ্দেশ্যঃ আল্লাহ তায়ালার হুকুম রাসুল (সঃ) এর তরীকায় আল্লাহতায়ালার ধ্যানের সহিত আদায় করা।
íজিকিরের লাভঃ যে ব্যক্তি জিকির করিতে করিতে তার জিহ্বা তরুতাজা রাখবে সে হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
íজিকির করার তরীকাঃ জিকিরের হাক্কিকত হাসিল করার জন্য ৩ লাইনে মেহনত করতে হবেঃ
(ক) দাওয়াত (খ) মশ্ক (গ) দোয়া।
(ক) দাওয়াতঃ উম্মতের মাঝে চলতে ফিরতে জিকিরের উদ্দেশ্য ও ফাজায়েলকে সামনে রেখে দাওয়াত দিতে হবে।
(খ) মশ্কঃ জিকিরের হাক্কিকত দিলে পয়দা করার জন্য ৪ লাইনে মেহেনত করতে হবে।
(১) রোজানা কোরআন তেলোয়াত করা
(২) সকাল বিকাল তিন তাছবিহ আদায় করা।
(৩) জায়গা বিশেষ মাসনুন দোয়া আদায় করা
(৪) সব সময় জবানে জিকির চালু করা।
(গ) দোয়াঃ জিকিরের হাকিকত দিলে পয়দা হওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতে থাকা।
(৪) একরামের উদ্দেশ্যঃ হুসনে আখলাক (আখলাকে নবুয়াত) নিজের জিন্দেগীতে অর্জন করা। আখলাকে নবুয়াত হল জালেমকে মাফ করা, তার জন্য দোয়া করা, অপরের খারাবির মধ্যে ভালাই দেখা এটাই একরাম।
í একরমের লাভঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের উপকার করার জন্য চেষ্টা করে আল্লাহপাক তাকে দশ বছরের এতেকাফ করার চেয়ে উত্তর সওয়াব দান করেন।
í হাসিল করার তরীকাঃ একরামের হাক্কিকত হাসিল করার জন্য ৩ লাইনে মেহনত করতে হবে।
(ক) দাওয়াত (খ) মশ্ক (গ) দোয়া।
(ক) দাওয়াতঃ উম্মতের মাঝে চলতে ফিরতে একরামের উদ্দেশ্য ও ফাজায়েলকে সামনে রেখে দাওয়াত দিতে হবে।
(খ) মশ্কঃ আমার পরিবার, সমাজের মুসলিম ও অমুসলিম প্রত্যেকের হক আমার দ্বারা আদায় হয় এ জন্য কোশেশ করা।
(গ) দোয়াঃ একরামের হক আমার দ্বারা আদায় হয়ে যায় এজন্য আল্লাহ্র কাছে দোয়া করতে থাকা।
(৫) তাছিহ্যি নিয়ত এর মাকসাদঃ আল্লাহ তায়ালার হুকুমে হুজুর পাক (সঃ) এর তরীকায় আল্লাহ তায়ালার রাজী খুশীর জন্য আদায় করা। নিজের ভালইর মধ্যে খারাবী দেখা এটাই এখলাছ।
í লাভঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার রাজি খুশী করার জন্য একটি খুরমা খেজুর আল্লাহ্র রাস্তায় দান করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে পাহাড় পরিমান নেকী দান করবেন।
í হাসিল করার তরীকাঃ ছহী নিয়তের হাক্কিকত হাসিল করার জন্য ৩ লাইনে মেহেনত করতে হবে।
(ক) দাওয়াত (খ) মশ্ক (গ) দোয়া।
(ক) দাওয়াতঃ উম্মতের মাঝে চলতে ফিরতে এখলাছের উদ্দেশ্য ও ফাজায়েলকে সামনে রেখে দাওয়াত দিতে হবে।
(খ) মশ্কঃ প্রতিটি কাজের আগে, মাঝে ও শেষে নিয়্যাতকে যাছাই করা যে, আমলটি আল্লাহ্ তায়ালার জন্য হচ্ছে কিনা, কোন কমতি থাকলে এ জন্য এস্তগফার করা।
(গ) দোয়াঃ এখলাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
৬। দাওয়াতে তাবলীগের উদ্দেশ্যঃ নিজের ঈমান ও আমল ছহী হয়ে যায় এবং সমস্ত উম্মতে মুহাম্মদীর ঈমান ও আমল ছহী হয়ে যায় এজন্য জান মাল নিয়ে আল্লাহ্র রাস্তায় বাহির হয়ে হুজুর (সঃ) ওয়ালা মেহনতকে জিন্দা করা।
í লাভঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্র রাস্তায় বাহির হয়ে এক টাকা খরচ করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে ৭ লক্ষ টাকা ছদকা করার ছওয়াব দান করবেন এবং একটা নেক আমল করলে ৪৯ কোটি নেক আমল করার সওয়াব দান করবেন।
হাসিল করার তরীকাঃ দাওয়াতের হাক্কিকত হাসিল করার জন্য ৩ লাইনে মেহেনত করতে হবে।
(ক) দাওয়াত (খ) মশ্ক (গ) দোয়া।
(ক) দাওয়াতঃ উম্মতের মাঝে চলতে ফিরতে এ কথা বুঝান যে, আমার জান ও মাল আমার না, আমার জান ও মাল আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের বিনিময় খরিদ করে নিয়েছেন। এই উম্মত যদি তার জান ও মালকে দ্বীনের কাজে ব্যয় না করে তাহলে তার মাল তার অজান্তে ইহুদী নাছারাদের হাতে চলে যাবে। এ জন্য তার বিন্দু মাত্রও অনুশোচনা হবে না।
(খ) মশ্কঃ সর্বদা দ্বীনের তাকাজাকে সামনে রেখে আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বাহির হওয়া। মুমিন তো ঐ ব্যক্তি যে দ্বীনের তাকাজাকে সামনে রেখে আল্লাহ্ তায়ালার রাস্তায় বাহির হয়।
(গ) দোয়াঃ আমার পুরা জান পুরা মাল আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় ব্যয় হয়ে যায় এজন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতে থাকা।
এটি পিডিএফ ফাইলে পেতে এখান থেকে ডাউনলোড করুন মাত্র 99কে.বি।
ভাল লিখেছেন, তবে আর একটু বিস্তারিত লিখলে ভালো হত। তবে জনসাধারনের উদ্দেশ্যে এভাবে লেখাটা কতটা যৌক্তিক তা আমার বোধগম্য নয়। ধন্যবাদ