ছেলে-মেয়েদের আদব শিক্ষা দিবার নিয়ম
ছেলে-মেয়েদের আদব শিক্ষা দিবার নিয়ম

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহিম

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সাবাই? আশা করি ভালই আছেন? আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভাল আছি। তাহলে কাজের কথায় আসি।

 ছেলে-মেয়েদের আদব শিক্ষা দিবার নিয়ম:

আল্লাহ্ ইচ্ছায় তোমার ইচ্ছাপকে পর্যবসিত কর। আল্লাহ্র উপর ভরসা কর। নিজের ত্রুটি স্মরণ কর। ইহা চাহিও না যে, ছেলে সম্পূর্ন তোমার ইচ্ছা ও মর্জি অনুযায়ী হইবে। সন্তানের উপর পূণ্য শাসন জারী করিতে চাহিও না। মোবাহ্ কথাবার্তা বলিতে জায়েজভাবে মেলামেশা করিতে, খেলাধুলা করিতে ছেলেকে বাধা দিও না। অবশ্য ছেলেমেয়েদের কু-সংসর্গ হইতে বাঁচাইয়া রাখিবে।

মিথ্য বলিতে, গালি দিতে, পরের শেকায়েত করিতে বা ঝগড়া করিতে দেখিলে কঠোরভাবে নিষেধ করিবে এবং ওস্তাদের খেদমত করিতে, অতিথি সেবা করিতে, গরীবের প্রতি দয়া করিতে শিক্ষা দিবে। ধার্মিক হইতে শিক্ষা দিবে, অলস হইতে দিবে না; পরেরটা লওয়া-খাওয়ার অভ্যাস হইতে দিবে না। স্বাবলম্বী ও গায়রতদার হওয়া শিক্ষা দিবে। ছেলের হাতে পয়সা না দিয়া নিজে (বা ওস্তাদের) হাতে তাহার পছন্দ জিনিস তাহাকে কিনিয়া দাও। যখন ছেলেরা জেদ করে তখন তাহাদেরে নরম কথায় খোশামোদ করিও না, কারণ ইহাতে অভ্যাস খারাপ হইবে। যদি তাহারা কোন অন্যায় কাজ করে তাহাদেরে গালি দিও না বা কর্শ বাক্য প্রয়োগ করিও না; নতুবা তাহারাও ঐ গালি ও কর্শ বাক্য শিখিবে; মোলায়েমভাবে তাহাদের বুঝাইয়া দিবে এবং শাস্তির ভয় দেখাইবে। তাহাদেরে বেশী প্রহার করিও না বা ঘরের মধ্যে বা মক্তবের মধ্যে বেশী আবদ্ধ করিয়া রাখিও না। সব সময় পড়িবার তালে থাকিবার জন্যও তাহাদেরে বাধ্য কিরও না; তাহাতে তাহাদের মন ক্লান্ত ও বিদ্রোহী হইয়া উঠে এবং জেহেন থেতা হইয়া যায়। সব সময় তাহাদের জন্য আল্লাহ্র নিকট দোয়া চাহিতে থাকিবে এবং নিয়ত ভাল রাখিবে এবং আল্লাহ্র ইচ্ছার বিরুদ্ধ ইচ্ছা মনে পোষণ করিবে না। সৎ চেষ্টার ত্রুটি করিবে না, চেষ্টার ফল না পাইলে তাহার দোষ আল্লাহ্র উপর চাপাইবে না, নিজেই ত্রুটি স্বীকার করিয়া নিজে নিজে তওবা ও এস্তগফার করিবে। ছেলে যখন শেয়ানা হইয়া যায় তখন তাহার সহিত ভাইয়ের মত ব্যবহার করিবে। অনেকে ছেলেকে বা অন্য কোন আত্মীয় বা খাদেমকে সম্পত্তি লিখিয়া দিয়া বে-অকুফ হইয়া বসে তদ্রুপ করিবে না। মৃত্যুর জন্য তৈয়ার থাকিবে, কিন্তু মৃত্যু না আসা পর্ন্ত খাওয়া পড়ার বন্দোবস্ত হাতছাড়া করিবে না। মৃত্যুকালে ওয়ারেছদের জন্য সম্পত্তির অছিয়ত করিয়াও কোন লাভ নাই। তাহাদেরে অছিয়ত করিবে আল্লাহ্র দ্বীন রছুলের ছুন্নত তরিকার উপর আজীবন কায়েম থাকিবার জন্য এবং অন্য যাহারা খাছ খেদমত করিয়াছে তাহাদের জন্য বা অন্যান্য ইসলামী সৎকাজের জন্য এক তৃতীয়াংশ বা এক চতুর্সাংশ অছিয়ত করিয়া যাইবে।

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন- দুইটি গোনাহর শাস্তির জন্য কেয়ামতের অপেক্ষা করা হইবে না, দুনিয়াতেই তাহাদের শাস্তি দেওয়া হইবে। একটি জুলুম-অত্যাচার, অন্যটি মা বাপের নাফরমানি করা- মা বাপকে কষ্ট দেওয়া।

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন- “আও অলু মা-য়্যূ-দউ ফিল মি-ঝা নি হুছ্নুল্ খল্কি ছ্ ছাখা-ই”-হাশরের ময়দানে নেকী বদী ওজনের সময় সর্বপ্রথমে নেকীর পাল্লায় রাখা হইবে উত্তম স্বভাবকে এবং ছাখাঅতি ও দানশীলতাকে।

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন- “তাক্ওয়া (পরহেজগারী) এবং উত্তম স্বভাব এই দুইটি জিনিসই অধিকাংশ লোককে বেহেশতে পৌঁছাইবে।”

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন- যে তোমাকে ছিন্ন করে তাহাকে তুমি মিলিত কর, যে তোমাকে বঞ্চিত করে তাহাকে তুমি দান কর, যে তোমার উপর অন্যায় অত্যাচার করে তাহাকে তুমি ক্ষমা কর, ইহাই উত্তম স্বভাব।

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন- “লা-য়াদ্ খুলুল্ জান্নাতা ক-তিউন” যে কতয়ে রেহম করবে অর্থাৎ যে ভাই-বোন, ভাতিজা, ভাগিনা, মামু, খালা, চাচা, ফুফু ইত্যাদি এগানাগনের সহিত আত্মীয়তা ছেদন করিবে সে বেহেশতে যাইতে পারিবে না।

 

হাদীসঃ হয়রত মো‘আজ (রা.) বলিয়াছেন, আমাকে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) অছিয়ত করিয়াছেন- হে মো’আজ! যেখানেই থাক তাক্ওয়া পরহেজগারি অবলম্বন করিয়া থাক, আল্লাহ’র ভয় সর্বদা দেলে জাগরিত রাখ, মিথ্যা কথা বলিও না, সদা সত্য কথা বল, অঙ্গীকার রক্ষা কর, অঙ্গীকার ভঙ্গ করিও না, আমানতে খেয়ানত করিও না, আমানতের হেফাজত কর, আশ্রিত ব্যক্তিকে এবং প্রতিবেশীকে ছালাম কর, আমল ভাল করিয়া কর, অনেক আশা করিও না, সর্বদা ঈমানদারীকে শক্ত করিয়া ধরিয়া রাখিও, কোরন শরিফ বুঝিয়া পাঠ কর, আখেরাতকে ভালবাস, হিসাবের ভয় কর, নম্র স্বভাব ধারণ কর, জ্ঞানী লোককে মন্দ বলিও না, সত্যবাদীকে মিথ্যুক বলিও না, পাপীর কথা শুনিও না, ন্যায় পরায়ন এমামের অবাদ্য হইও না, এম কোন কাজ করিও না যাহাতে দেশের মধ্যে ফেৎনা ফাছাদের সৃষ্টি হয়-খাছ করিয়া এই অছিয়ত যে, যেখানেই থাক আল্লাহ্র ভয় দেলে রাখিও এবং যখন কোন গোনাহ্ হইয়া যায় অবিলম্বে নতুন করিয়া তওবা করিয়া লইও। যদি প্রকাশ্য গোনাহ্ হয় তবে প্রকাশ্যে তওবা করিও।

 

ভাল লাগলে কমেন্টে জানাতে ভুলবে না…

ভুলে ভরা জীবনে ভুল হওয়াটা অসম্ভব কিছু নয়,যদি আমার লেখার মাঝে কোন ভুলত্রুটি থাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সবাই ভাল থাকবেন।

আপনার কম্পিউটার সমস্যা সমাধানে আমরা আছি ফেইজবুকে: পিসি হেল্প সেন্টার

আমাদের সাইটের সকল পোষ্ট আপনার ফেসবুকের ওয়ালে পেতে পেজ লাইক করুন (পিসি হেল্প সেন্টার)

একসাথে পিসি হেল্প সেন্টার এবং ইসলামিক এমবিট সাইটে প্রকাশিত করা হয়েছে।