আগেই বি:দ্র: একটু সময়ে করে পড়বেন, অন্য দিকে তো অনেক সময় দিয়েছেন এবার একটু সময় করে দু’একটা হাদীস এর কথা পড়ুন, আশা করি মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার মনকে পরিস্কার করে দিবে।
আসসালামু আলাইকুম, এই সকালে কেমন আছেন সবাই?? ফজরের নামাজ কে কে আদায় করেছেন এক হাত তুলে দেখেন, আর যে জামাত এর সাথে আদায় করেছেন সে, দু’ই হাত তুলে দেখান। আমরা সকলেই তো অনেক পেজ লাইক করি কারণ সেই পেজ এ যা লিখা হয় তা আপনার হোম পেজ এ চলে আসবে এই আশায় তাই না?? আর দেখা যায় আমাদের যা লাইক দেয়া পেজ তার মধ্যে অধিকাংশই কোন কাজের না, কোন গান বা কৌতুক জাতীয় কিছু, কিন্তু যাদিয়ে আমাদের কাজ হবে, বা আখিরাতে কিছু একটা পাওয়া যাব, এই রকম আশা নিয়ে আমরা কে কয়টা পেজ লাইক করেছি একটু হিসাব করে দেখেছি?? আসুন আপনার এমন একটি পেজ এ লাইক দিব যা দিয়ে ইসলাম কায়েম এর একটি পথ ও বলা যেতে পারে, কারন প্রতিদিন একটি হাদীস পড়ে বা অধিক হাদীস পড়তে পড়তে হয়তো আপনার মোন একদিন চেইঞ্জ করে দিতে পারে ‘মহান আল্লাহ’ কাকে যে কি ভাবে আল্লাহ তায়ালা হেদায়েদ দান করে তা কিছুতেই বলা সম্ভব না, তাই আসুন প্রতিদিন হাদীস পড়ি এবং মনকে আল্লাহর রাস্তা (ইসলাম) এর পথে নিয়ে আসার চেষ্টা করি এই হাদীস আমলা করার চেষ্টা করি এবং আল্লাহ’র কাছে হেদায়েত ভিক্ষা চাই, যদি আল্লাহ তায়ালা দয়া করে আমাদের সকলকে হেদায়েত চাই, আল্লাহ আমাদের হেদায়েত করতেও পারে, যদি হেদায়েত করে তবেইতো আমরা আল্লাহ’র এর পথে চলতে পারব আর আল্লাহর এর পথে চলতে পারলেই আমরা জান্নাতি, আমরা চাইলেই তো কিছু করতে পারি না, আগে আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে, ইসলাম কায়েক এর জন্য, বাকি টুকু আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবে, আমরা চেষ্টা না করলে আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দিবেন না, আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন, যে বান্ধা আমার দিকে এক পা আগে আমি তার দিয়ে 2পা আগাই, আর যে বান্ধা আমার দিকে আগায় না, আমিও তার দিকে আগাই না, যেমন আমরা ছোট বেলায় যখন প্রথম হাটা শিখি তখন বাচ্চা কে ছেড়ে দিয়ে মা দূড়ে দাঁড়িয়ে থাকে, বাচ্চা না আগে মা দূড়েই হাত পেতে বসে থাকে বাচ্চা যখন এক পা আগিয়ে পরে যাওয়া দরে তখন মা দৌড় দিয়ে বাচ্চাকে পরে যাওয়া আগেই দরে এবং কোলে নেয়, মাহান আল্লাহ রব্বুল আল-আমীন বলেনছেন সেই ভাবে আমার দিকে যে এগিয়ে আসতে চায় আমিও তার দিকে সেই রকম গতিতে চলি, কাজেই আগে আমাদের ইচ্ছা থাকতে হবে, তারপরে বাকিটা আল্লাহ’র ইচ্ছা।
প্রথমেই এই পেজটি লাইক করি ‘আল হাদীস”
প্রথমে বলেনেই, হাদীস শুনা বা পড়ার সময় যদি কোন ভাল বা সু-সংবাদ হয় তবে (সুবাহান আল্লাহ/আলহামদুল্লিলাহ) এর যে কোন একটি পড়তে হয়, আবার যদি কোন খারাপ বা দুঃখের-সংবাদ শুনা বা পড়া হয় তবে (নাউজুবিল্লাহ্/ইন্নান্নিনা) পড়তে হয়। তাহলে একটু সময় করে একটি হাদীস পড়ি সকলে এবং এটা মেনে চলার চেষ্টা করি।
আপনি নিজে পড়ুন এবং আপনার বন্ধুদেরকে আমন্ত্র জানান, আমন্ত্র জানানোর জন্য ছবিতে তাদের ট্যাগ করুন।
01। হযরত আবু হোরায়রা (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, ঈমানের সত্তরেরও অধিক শাখা রহিয়াছে। অন্মধ্যে সর্বোত্তম শাখা হইল, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা এবং সর্বনিম্ন শাখা হইল, রাস্তা হইতে কষ্টদায়ক জিনিস সরাইয়া দেওয়া এবং লজ্জা ঈমানের একটি (বিশেষ) শাখা। (মুসলিম) (মুন্তাখাব হাদীস, পৃষ্ঠা নং-19, হাদীস নং 01)
02। হয়রত আবু বকর (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, যে ব্যক্তি সেই কালিমাকে কবুল করিবে যাহা আমি আমার চাচা (আবু তালেবে)র নিকট (তাহার মৃত্যুর সময়) পেশ করিয়াছিলাম এবং তিনি তাহা প্রথ্যাখ্যান করিয়াছিলেন, সেই কালেমা এই ব্যক্তির জন্য মুক্তির (উপায়) হইবে। (আহমদ) (মুন্তাখাব হাদীস, পৃষ্ঠা নং-19, হাদীস নং 02)
03। হয়রত আবু হোরায়রা (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, আপন ঈমানকে তাজা করিতে থাক। কেহ আরজ করিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ। আমরা আপন ঈমানকে কিভাবে তাজা করিব? তিনি বলিলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহকে বেশী বেশী বলিতে থাক। (মুসনাদে আহমদ, তাবারানী, তারণীব) (মুন্তাখাব হাদীস, পৃষ্ঠা নং-20, হাদীস নং 03)
04। হয়রত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রায়িঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই এরশাদকরিতে শুনিয়াছি যে, সমস্ত যিকিরের মধ্যে সর্বোত্তম যিকির হইল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং সমস্ত দোয়ার মধ্যে সর্বোত্তম দোয়া হইল ‘আলহামদুলিল্লাহ’।(তিরমিয়ী)
ফায়দাঃ ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সর্বোত্তম যিকির এই জন্য যে, পূরা দ্বীন (ইসলাম) ইহার উপরই নির্ভরশীল। ইহা ছাড়া না ঈমান ঠিক হয় আর না কেহ মুসলমান হইতে পারে।
‘আলহামদুলিল্লাহ’কে সর্বোত্তম দোয়া এইজন্য বলা হইয়অছে যে, দাতার প্রশংসা করার উদ্দ্যেশ্যই হইল চাওয়া ও সওয়াল করা, আর দোয়া হইল আল্লাহ তায়ালার নিকট চাওয়ার নাম। (মুন্তাখাব হাদীস, পৃষ্ঠা নং-20, হাদীস নং 04)
05। হয়রত আবু হোরায়ারা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, (যখন) কোন বান্দা অন্তরের এখলাসের সহিত ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে, তখন এই কলেমার জন্য নিশ্চিতরূপে আসমানের দরজাসমূহ খুলিয়া দেওয়া হয়। এমনকি এই কলেমা সোজা আরশ পর্যন্ত পৌঁছিয়া যায়। অর্থাৎ সাথে সাথেই কবুল হইয়া যায়।তবে শর্ত হইল, যদি এই কলেমা পাঠকারী কবীরা গুনাহ হইতে বাঁচিয়া থাকে। (তিরমিযী)
ফায়দাঃ এখলাসের সহিত বলার অর্থ এই যে, উহার মধ্যে লোক দেখানো এবং মোনাফেকী না থাকে। কবীরা গুনাহসমূহ হইতে বাঁচিয়া থাকার শর্ত লাগানো হইয়াছে। আর যদি তাড়াতাড়ি কবুল হওয়ার জন্য কবীরা গুনাহের সহিতও পাঠ করা হয় তবুও লাভ সওয়াব হইতে খালি হইবে না। (মিরকাত) (মুন্তাখাব হাদীস, পৃষ্ঠা নং-20, হাদীস নং 05)
06। হয়রত ইয়ালা ইবনে সাদ্দাদ (রাযিঃ) বলেন, আমার পিতা হযরত সাদ্দাদ (রাযিঃ) এই ঘটনা বর্ণনা করিয়াছেন এবং হযরত উবাদা (রাযিঃ) যিনি সেই সময় উপস্থিত ছিলেন উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করিয়াছেন যে, একবার আমার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করিলেন, কোন অপরিচিত ব্যক্তি (অমুসলিম) এই মজলিসে আছে কি? আমরা বলিলাম, কেহ নাই। তিনি এরশাদ করিলেন, দরজা বন্ধ করিয়া দাও। অতঃপর এরশাদ করিলেন, হাত উঠাও এবং বল, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আমরা কিছুক্ষণ হাত উত্তোলন করিয়া রাখিলাম (এবং কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ পড়িলাম)। অতঃপর তিনি নিজ হাত নামাইলেন এবং বলিলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, হে আল্লাহ, আপনি আমাকে এই কালেমা দিয়া প্রেরণ করিয়াছেন এবং আমাকে ইহার (কালেমার তবলীগ করার) হুকুম করিয়াছেন এবং এই কালেমার উপর জান্নাতের ওয়াদা করিয়াছেন। আর আপনি ওয়াদা ভঙ্গকারী নহেন।’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লুহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলিলেন, আনন্দিত হও, আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে ক্ষমা করিয়া দিয়াছেন। (মুসনাদের আহমাদ, তাবরানী, বাযযার, মাজমায়ে যাওয়ায়েদ) (মুন্তাখাব হাদীস, পৃষ্ঠা নং-21, হাদীস নং 06)
07। হয়রত আবু যার (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলিয়াছে অতঃপর উহার উপর মৃত্যুবরণ করিয়াছে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আমি আরজ করিলাম, যদিও সে যেনা করিয়া থাকে? যদিও সে চুরি করিয়া থাকে? তিনি এরশাদ করিলেন, (হ্যাঁ) যদিও সে যেনা করিয়া থাকে, যদিও সে চুরি করিয়া থাকে। আমি পুনরায় আরজ করিলাম, যদিও সে যেনা করিয়া থাকে, যদিও সে চুরি করিয়া থাকে। এই রকম 3 (তিন) বার আরজ করিলাম। তিনি এরশাদ করিলেন, যদিও সে যেন করিয়া থাকে, যদিও সে চুরি করিয়া থাকে। আবু যারের অপছন্দ হইলেও সে জান্নাতে অবশ্যই প্রবেশ করিবে। (বুখারী)
ফায়দাঃ ‘আলার রাগম’ আরবী ভাষার একটি বিশেষ পরিভাষা। উহার অর্থ হইল, যদিও তোমার নিকট এই কাজটি অপছন্দনীয় হয় এবং তুমি উহার না হওয়াই চাও তবুও উহা হইয়াই থাকিবে। হযরত আবু যার (রাযিঃ) এর নিকট আশ্চর্য লাগিতেছিল যে, এত বড় বড় গুনাহ সত্ত্বেও জান্নাতে কিরূপে প্রবেশ করিবে। যেহেতু ইনসাফের তাকাজা ইহাই যে, গুনাহের কারণে শাস্তি দেওয়া হইবে। সুতরাং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহার আশ্চর্যবোধকে দূর করার জন্য বলিলেন, যাই আবু যারের যতই অপছন্দনীয় হউক না কেন সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করিবে। এখন যদি সে গুনাহ করিয়া ও থাকে তবে ঈমানের তাকাজা অনুয়ায়ী তওবা এস্তগফার করিয়া গুনাহ ক্ষমা করাইয়া লইবে। অথবা আল্লাহ তায়ালা নিজ গুণে মাফ করিয়া শাস্তি ব্যতীত অথবা গুনাহের শাস্তির দেওয়ার পর সর্বাবস্থায় অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করাইবেন। ওলামায়ে কেরাম লিখিয়াছেন, এই হাদীসে কলেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার অর্থ পূর্ণ দ্বীণ ও তাওহীদের উপর ঈমান আনয়ন করা এবং উহাকে অবলম্বন করা (মা’রেফুল হাদীস) (মুন্তাখাব হাদীস, পৃষ্ঠা নং-22, হাদীস নং 07)
08। হযরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত, নবী করূম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়অছেন, আমি এমন একটি কলেমা জানি যাহা কোন মৃত্যু নিকটবর্তী ব্যক্তি পাঠ করিলে তাহার শরীর হইতে রূহ বাহির হওয়ার সময় এই কলেমার বরকতে অবশ্যই আরাম পাইবে। আর ঐ কলেমা তাহার জন্য কেয়ামতের দিন নূর হইবে। (সেই কলেমা হইল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) (আবু ইয়ালা মাজমায়ুয় যাওয়ায়েদ) (মুন্তাখাব হাদীস)
9। হয়রত আনাস (রাযিঃ) বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এরশাদ করিতে শুনিয়অছি যে, যখন কেয়অরমতের দিন হইবে তখন আমাকে সুপারিশ করার ইজাযত দেওয়া হইবে। আমি আরজ করিব, হে আমার রব। এরূপ প্রত্যেক ব্যক্তিকে জান্নাতে দাখিল করিয়া দিন যাহার অন্তরে সরিয়অর দানা পরিমাণও (ঈমান) রহিয়অছে। (আল্লাহ তায়ালা আমার এই সুপারিশ কবুল করিবে।) আর ঐ সমস্ত লোক জান্নাতে দাখিল হইয়া যাইবে। পুনরায় আমি আরজ করিব, এরূপ প্রত্যেক ব্যাক্তিকে জান্নাতে দাখিল করিয়অ দিন যাহার অন্তরে সামান্য পরিমাণও (ঈমান) রহিয়অছে। (বোখারী) (মুন্তাখাব হাদীস, পৃষ্ঠা নং-29, হাদীস নং 17)
ধন্যবাদ, অনেক সুন্দর