আল হাদীস
আল হাদীস

আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন? সবাই? আশা করি ভালই আছেন? আমিও আপনাদের দোয়া অনেক ভাল আছি। আপনারা জানেন বা দেখেছেন আমাদের ওয়েব সাইটের ডান পাশে একটি আল হাদীস নামে একটি পেজ আছে সেই পেজ এর প্রতিদিন হাদীস শেয়ার করা হয়, আর আমি চিন্তা করেছি আমাদের সেই আল হাদীস পেজে প্রতিদিন যে হাদীস শেয়ার করব তার সপ্তাহে একটি শেয়ার করব, ঐ সপ্তাহে কত তারিখে কোন কোন হাদীস শেয়ার করা হয়েছে তা পুরো সপ্তাহের হাদীস গুলো এখানে পর্ব হিসাবে শেয়ার করা হবে।

তাহলে আজ প্রথম পর্ব শুরু করলাম কি কি/ কোন কোন তারিখ শেয়ার করা হয়েছে, দেখুন, যদি আপনি সেই দিনের হাদীস মিস করে থাকে তাহলে এখান থেকে এখনই পড়ে নিন।

আর প্রতিদিন হাদীস পেতে আমাদের আল হাদীস পেজ লাইক করুন।

২৬-৯-২০১২

হাদীসঃ “রগিমা আন্ ফুহু! রগিমা আন্ ফুহু! রগিমা আন্ ফুহু! কি-লা মান্ ইয়া রাসূলুল্লাহ……..!”

 

অর্থ ঃ হতভাগ্য সেই! হতভাগ্য সেই!! হতভাগ্য সেই!!! যে বৃদ্ধাবস্থায় তাহার পিতা-মাতাকে-দুইজনকেই বা একজনকে পাইয়অছে অথচ (তাহাদের খেদমত করিয়া তাহাদের মনস্তুষ্টি সাধন করিয়া) বেহেশ্ত লাভ করিয়া লয় নাই।

 

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মাদ (সঃ) বলিয়াছেন, “যে সু-পুত্র ভক্তিভরে নত শিরে তাহার পিতা-মাতার দিকে দৃষ্টি করিবে তাহার জন্য তাহার প্রত্যেক দৃষ্টির পরিবর্তে একটি কবুল হজ্জের ছওয়াব লেখা হইবে।”

 

27-09-2010

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন “আন্তা অ মা-লুকা লি আবি-কা”।

অর্থঃ তুমি এবং তোমার মার সবই তোমার বাপের।

উপদেশঃ মা বাপের খেদমত যে করিবে তাহার দারিদ্রতা দূর হইয়া যাইবে এবং ধন-দৌলত বৃদ্ধি হইবে।

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন-“তিন প্রকারের লেঅকের উপর কেয়ামতের দিন আল্লাহ্র দয়া দৃষ্টি হইবে না: (০১) যে মা বাপকে অসন্তুষ্ট রাখিবে, (০২) যে নেশা পানের অভ্যাস রাখিবে এবং (০৩) যে দান করিয়া তাহার খোটা দিবে।

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন-“এই কয়টি সবেচেয়ে বড় কবিরা  গোনাহঃ (১) আল্লাহ্র সঙ্গে শরিক করা, (২) মা বাপকে কষ্ট দেওয়া, (৩) মানুষ খুন করা, (৪) মিথ্যা কথা বলা।

হাদীসঃ কেয়ামতের দনি যখন মা বাবাও আপনাকে আমাকে চিনতে পারবে না, তখন আপনার সব চেয়ে উপকারী বন্ধুকে কে হবে? যানেন? চিনে নিন। তখন সবচেয়ে উপকারী বন্ধু হিসাবে আপনি পাবেন তাকে যার কাছে আপনি দুনিয়াতে বসে এক তিল পরিমানও টাকা পাওনা ছিল, হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলেন- দুনিয়াতে যদি কেহ কারো টাকা পয়সা না দেয়া বা ঠকিয়ে খায় তাহলে কেয়ামতের দিন আপনি তার কাছে যত টাকা পাইতেন তার ন্যায্য মূল্য ধরিয়া আল্লাহ্ তার নেক আমল থেকে ঐ টাকার নেক আমল আপনাকে দিয়ে দিবে, যেখানে আপনার মা বাবাও একটি নেকি আপনাকে দিতে চাইবে না, তাই আপনি যদি কারো কাছে টাকা পয়সা পান তাহলে তাকে কেয়ামতের ভয় দেখান এবং টাকা আদায় করার চেষ্টা করুন কিন্তু ভুলেও কখনও গালাগালি করিবেন না, তাহলে আপনারও পাপ হবে, তাই গালাগালি না করিয়া যদি টাকা তুলিতে না পারেন তাহলে বাসায় এসে আল্লাহ্ র কাছে শুকরিয়া জানান, এবং কেয়ামতের জন্য অপেক্ষা করুন সঠিক বিচার পাবেন।

 

29-09-2012

 

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন তোমরা তোমাদের মা বাপের খেদমত কর, তাহা হইলে তোমাদের ছেলেরাও তোমাদের খেদমত করিবে এবং তোমরা সচ্চরিত্র হও তাহা হইলে তোমাদের স্ত্রীগণও সচ্চরিত্র হইবে।

 

 

হাদীসঃ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিয়াছেন দীর্ঘ আয়ু এবং অফুরন্ত রেযেক দৌলত যে চায়, সে মা বাপের খেদমত করুক।

 

30-09-2012

 

হাদীসঃ একজন লোক আসিয়া হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর নিকট জিজ্ঞাস করিল, হুজুর! আমার মা বৃদ্ধাবস্থায় পতিতা, এমতবস্থায় যদি আমি তাঁহাকে, আমার হাতের দ্বারা খাওয়াই এবং আমার হাতের দ্বারা তাঁহাকে পান করাই, আমার হাতের দ্বারা তাঁহাকে ওজু-গোছল করাই এবং আমার কাঁধে ও কোলে করিয়া করিয়া আমি তাঁহাকে লাইয়া বেড়াই  তবুও কি তাঁহার হক আদায় হইবে না? হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলিলেন, ‘না’ একশত ভাগের একভাগও না, কিন্তু এইরূপ যদি তুমি কর তবে বাস্তবিকই তুমি মা’র সু-পুত্র, এরূপ করিলে আল্লাহ্ তোমার অল্পতে বেশি বরকত দান করিবেন।

 

 

হাদীসঃ পিতা মাতার সহিত সদ্ব্যবহার এই যে, যখন তাহাদের পানাহারের দরকার পড়ে তখন তাহাদের পানাহার করাইবে, যখন তাহাদের পরনের অভাব পড়ে তাহাদের পরনের কাপড় দিবে, যখন তাহাদের খেদমতের দরকার পড়ে (ওযু,গোছল,পেশাব,পায়খানা,রোগ-বার্দ্ধক্য ইত্যাদিতে) তখন তাহাদের খেদমত করিবে, যখন তাহারা ডাকে, তখন নম্রভাবে তাহাদের ডাকের উত্তর দিবে, যখন তাহারা কোন কাজের ফরমায়েশ করেন তখন তাহা পালন ও পূর্ণ করিবে (যদি আল্লাহর বিরুদ্ধের ফরমায়েশ না হয়) যখন তোহাদের সহিত কথা বলিবে তখন নরম ভাবে মোলায়েম কথা বলিবে, তাহাদের নাম উচ্চারণ করিয়া ডাকিবে না, তাহাদের আগে হাঁটিবে না, তাহাদের জন্য সব সময় দোয়া করিবে, তাহাদের চেয়ে উঁচু জায়গায় বসিবে না, এমন কোন কাজ করিবে না, যাহাতে মা বাপের উপর গালি আসিতে পারে।

 

মাছালাঃ মা বাপের নিকট পাওনা টাকা চাহিলে তাহা মা বাপের নাফরমানি বলা যাইবে না।

 

মাছালাঃ হক আদায় করার মধ্যে তরতিব এই-প্রথম মা, তারপর বাপ, তাপর সন্তান,তারপর দাদা-দাদী, নানা-নানী, তারপর ভঅই-ভগ্নী, তারপর চাচা-ফুফু, মামা-খালা ইত্যাদি।

 

01-10-2012

 

 

হাদীসঃ প্রত্যেকেই মা বাপ, সন্তান-সন্ততি এবং অন্যান্য অপেক্ষা নিজের সম্পত্তির অধিক হকদার; পূর্বে যে বলা হইয়অছে “তুমি এবং তোমার মাল সব তোমার বাপের” তার অর্থ এই যে, ছেলের যখন মাল থাকিবে এবং বাপের যখন অভাব হইবে তখন বাপকে দেওয়া ছেলের উপর ওয়অজেব হইবে, নতুবা অভাব ব্যতিরেখে যদি বাপ ছেলের মাল বলপূর্বক লয়, তবে তাহাকে জোর দখলকারী পর্যায়ভুক্ত করা হইবে। এইরূপে ছেলেরও যদি বাপের মাল না বলিয়া লয় তবে তাহাকে চোর সাব্যস্ত করা হইবে।

 

হাদীসঃ বাপের মৃত্যুর পর যদি কেহ খেদমত করিয়া বাপের সুপুত্র হইতে চায় তবে তাহার বাপ যাহাদের ভাল বাসিতেন তাহাদের খেদমত করা উচিৎ (যেমন বাপের স্ত্রী, ভাই,ভগ্নী, ছেলে, মেয়ে, নাতি, পোতা, শ্বশুর, শাশুড়ি, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদি।)

 

 

02-10-2012

 

হাদীসঃ  যে ছেলে জীবিত অবস্থায় মা বাপের খেদমত করিয়া সুপুত্র হইতে পারে নাই সে যদি মা বাপের মৃত্যুর পর তাহাদের দেনা পরিশোধ করিয়া দেয়, তাহাদের জন্য অনবরত দোয়া করিতে থাকে এবং এমন কোন কাজ না করে যাহাতে পিতামাতার কষ্ট হয় তবে সুপুত্র পর্যায়ভুক্ত হইবে, আর যে ছেলে জীবিত অবস্থায় মা বাপের উপর কলঙ্ক আসে, সে ছেলে কুপুত্র অর্থাৎ নাফরমান বেটা সাব্যস্ত হইবে।

 

মাছালাঃ ফকিহ্ আবুল্লায়েছ বলিয়াছেন-উক্ত ছেলে তিনটি কাজ করিলে তবে তাহারা মা বাপকে মরার পরও সন্তুষ্ট করিতে পারে, ১মঃ নিজে নেক পথে চলিবে, ২য়ঃ মা বাপের প্রিয়জনকে ভালবাসিবে, তৃতীয়, মাবাপের জন্য দোয়া করিবে এবং যথাসাধ্য দান-খয়রাত করিয়া তাহার ছওয়াব মা বাপের নামে বখ্ শিয়া দিবে।

 

হাদীসঃ আল্ খ-লাতু বি মাঞ্চিলাতিল্ উম্মি” – খালা মার তুল্য”

 

03-10-2012

 

 

হাদীসঃ “আল্ আকবারু মিনাল ইখ্অতি বিমাঞ্চিলাতিল্ আবি”- অর্থঃ বড় ভাই বাপের তুল্য।”

 

হাদীসঃ “আল্ আম্মু ছিন্‌ুন লি-আবি-হি- অর্থ চাচা বাপের তুল্য”

 

হাদীসঃ মাঞ্চা-র কব্র অ-লিদাইহি আও আহাদিহিমা ফি-কুল্লি, জুমুআতিন মাররতান, গুফির লাহু অ-কুতিবা বাররন্” অর্থঃ যে সপআহে শুক্রবারে একবার মা বাপের কবর জেয়ারত করিবে তাহার গোনাহ্ মাফ করিয়া দেওয়া হইবে এবং তাহাকে মা বাপের সুপুত্র বলিয়া লেখা হইবে।

 

মাছালাঃ পুরুষের জন্য মৃত্যু এবং আখেরাতের কথা স্মরণ করিবার জন্য কবর জেয়ারত করা মোস্তাহাব। স্ত্রীলোকদের জন্য কবর জেয়ারত করা মকরূহ (কিন্তু হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর কবর শরীফ জেয়ারত করা মেয়েদের জন্যও মাকরূহ নহে বরং মোস্তাহাব)

 

কবর জেয়ারত করিবার নিয়মঃ কবরের কাছে গিয়া বলিবে, “আছ্ ছালামু আলাইকুম দা-র কওমিম্মু’ মিনিন্ অ-ইন্ন ইনশা-আল্লা-হু বিকুম লা হিকূ-না, নাছ আল্-ল্লা হা লানা-অলাকুমুল্ আ’ ফিয়াতা, আল্লা-হুম্মা লা তাহরিম্না আজ্রহুম আলাতাফ্, তিন্না-বা’ দাহুম’ অগইফরলানা অলাহুম”

তারপর কিছুক্ষণ নিজের মৃত্যুর চিন্তা করিবে এবং তারপর কোরআন শরীফের কিছু অংশ যেমন সূরা ফাতেহা, সূরা এখলাছ (৩বার), সূরা তাকাছুর, সূরা ইয়াছিন ইত্যাদি পড়িয়া এই রূপে দোয়া করিবে, “আ-ল্লা-হুম্মা আওছিল্ ছাঅ-বা মা করা’তু ইলা ফুলানিন্।” হায় আল্লহ্! আমি তোমার কালাম যাহা কিছু পড়িলাম তাহার ছওয়াব অমুককে বা অমুক অমুককে পৌঁছাইয়া দাও।