ফেইসবুকেই যার রাত্রি পার হতো, সে একদিন বন্ধুর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারলেন। বন্ধুর পরামর্শে ফ্রিল্যান্সিং ওয়ার্কপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলে কাজ শুরু করলেন। এখন ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন।
অন্যদের গল্প একটু ভিন্ন হলেও প্রায় কাছাকাছি। তাদের কেউ শুরু করেছিলেন বড় ভাই বা সহকর্মীর কাছ থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জেনে। শেষে দেখা গেল, সেই গল্পই পাল্টে দিয়েছে তাদের জীবন। হতাশাও দূর করেছে অনেকের। এখন তারা মাসে আয় করছেন দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।
এ পর্বে থাকছে বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগের জেলা পর্যায়ের সেরা ৫ ফ্রিল্যান্সারদের জীবন বদলে যাওয়ার গল্প।
আব্দুল মালেক, ভোলা
ভোলার সেরা চরফ্যাশন থানার মাঝেরচর গ্রামের ছেলে মালেক গণিতে মাস্টার্স করেছেন। চারপাশের অনেকের কাছে ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার কথা শুনে এ বিষয়ে আগ্রহী হন। ২০১২ সালে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
ওডেস্কে এসইও, এসইএম, এসএমএম, ইমেইল মার্কেটিং ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের কাজ করেন মালেক। তবে অন পেইজ ও অফ পেইজ কিওয়ার্ড রিসার্চের কাজই বেশি করে থাকেন।
ব্যক্তিগত ও দলগত উভয়ভাবে বর্তমানে কাজ করেন ভোলার এ তরুণ ফ্রিল্যান্সার। তাদের গ্রুপে মোট ৬ জন সদস্য রয়েছে। প্রতিমাসে গড়ে অর্ধলক্ষাধিক টাকা আয় করছেন তিনি।
আগামীতে একটি মানসম্মত ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান চালু করতে ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রসার ঘটাতে কাজ করতে চান মালেক।
মিজানুর রহমান, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর সেরা মিজানুর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাই তিনি কুমিল্লাতেই থাকেন।
বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন একদিন ফেইসবুকে এক বন্ধু মেসেজ দেয় ‘এত রাতে কি করছেন?’ মিজানুর চ্যাট করার কথা জানায়। তখন ওই বন্ধু তাকে ইল্যান্সের লিংক দিয়ে চাইলে সেখান থেকে আয় করার কথা জানান।
তার পরামর্শে ইল্যান্সে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন মিজানুর। ওয়েব ডিজাইন ও গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ পছন্দ হয়। তাই এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে কাজ শুরু করেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
এরপর ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে নেওয়ার জন্য কাজ করে চলেছেন। এখন অপেক্ষা শুধু বিবিএ শেষ করার।
কাজের ওপর নির্ভর করে ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে কাজ করেন মিজানুর। ওডেস্কে এ পর্যন্ত ১৮৮ ঘন্টা কাজ করেছেন। আর প্রতিমাসে গড়ে আয় করছেন প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আগামীতে একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে চান তিনি।
আরিফ রেজা, দিনাজপুর
দিনাজপুরের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আরিফ। ২০১২ সালে অনলাইনে বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারেন। তারপরে এ বিষয়ে আগ্রহী হয়ে শেখা শুরু করেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি ওডেস্কে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টের কাজ করেন। ওয়েব ফ্রন্ট-এন্ড এবং ব্যাক-এন্ডসহ ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট করেন।
এর মাধ্যমে প্রতিমাসে আয় করছেন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
ব্যক্তিগতভাবে কাজ করেন আরিফ। তবে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে এখনই কোনো ভবিষৎ পরিকল্পনা নেই তরুণ শিক্ষার্থীর।
রাজু আহমেদ, সিলেট
সিলেটের সেরা রাজু শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগে বিএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। বর্তমানে সিলেটে বসবাস করেন।
কম্পিউটার বিষয়ে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছিল না রাজুর। ২০০৭ সালে বড় ভাই জাহিদ হাসানের কাছ থেকে ঘরে বসেই কম্পিউটার চালানো শেখেন। বড় ভাইয়ের ওডেস্কে সফলভাবে কাজ করার কথা শুনে এ বিষয়ে আগ্রহী হন। পরে ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন।
শুরুটা করেছিলেন ওয়েবে ডেটা রিসার্চ দিয়ে। বর্তমানে এসইও, এসএমএম, ইমেইল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন, ক্রেইগলিস্ট অ্যাড সাপোর্ট ইত্যাদি কাজ করেন।
রাজু ও তার বড় ভাই মিলে ‘প্রার্থনা আউটসোর্সিং’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এ প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য কাজ করেন।
ব্যক্তিগতভাবে রাজু প্রতিমাসে দেড় থেকে ২ লাখ টাকা আয় করেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সম্মিলিত আয় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। আগামীতে কাজের পরিধি বাড়াতে একটি ই-কমার্স সাইট তৈরি করছেন। এটি নিয়ে আগামীতে এগিয়ে যেতে চান।
সাইফুর রাহমান রনি, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের সেরা রনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি এখন ফ্রিল্যান্সিং করে বেশ ভালোই আছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারেন। তখন থেকে এ বিষয়ে আগ্রহ জন্মে তার। ২০১১ সালের শেষের দিকে নিজের চেষ্টায় বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেন।
বিভিন্ন ব্লগে প্রকাশিত লেখা পড়ে কাজ শুরুর বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করেন। অ্যাকাউন্ট খোলার মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় কাজ পেয়ে যান। পড়াশোনা শেষেও ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে নেওয়ার ইচ্ছা তার।
ওডেস্কে মূলত বেসিক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট টেমপ্লেট এডিটিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ বেশি করেন।
ব্যক্তিগতভাবে কাজ করে মাসে গড়ে ৫৫০ ডলার আয় করেন। নিজের কয়েকজন বন্ধুকে কাজ শিখিয়ে তাদেরও ফ্রিল্যান্সিং পেশায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন সাইফুর। আগামীতে নিজেকে একজন সফল অ্যাপ ডেভেলপার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তিনি।
এই রকম আরও কিছু পেতে ঘুরে আস আইডিয়া বাজ.কম থেকে।
>>>>>>>>>পোষ্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ<<<<<<<<<<<
অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আমাদের পটুয়াখালীর নাম দেখে খুবই ভাল লাগল 😀
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আগ্রহ যাগে কিন্তু পারিনা । ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য ।
কেন ভাই পারেন না কেন? আমি কি আপনাকে হেল্প করতে পারি? ওয়েব ডিজাইন শেখার জন্য?
চেষ্ট করতে থাকেন এক দিন সফল হবেন। দোয়া রইল।
ami to total kono kaj jani na but onak din dora try kortac ami ki korbo